বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

ফেসবুকে পরিচয়, প্রেম, শারীরিক সম্পর্ক; অতঃপর প্রেমিক উধাও!

ফেসবুকে পরিচয়, প্রেম, শারীরিক সম্পর্ক; অতঃপর প্রেমিক উধাও!

চেনাজানা ফেসবুকে। সেখান থেকেই গল্পের শুরুটা। প্রথমে বন্ধুত্ব, পরে প্রেমের সম্পর্ক। সেই প্রেম থেকে শারীরিক সম্পর্কে গড়ায়। ঘরবাঁধার স্বপ্ন নিয়ে ঘরছাড়ার সিদ্ধান্ত। সে অনুযায়ী প্রেমিকের হাত ধরে প্রেমিকা ঘর ছাড়ে। কিন্তু সেই ঘরবাঁধার স্বপ্ন পূরণ হলো না। প্রেমিকের পরিবার জানতে পারে ঘটনা। ভয় পেয়ে প্রেমিকাকে হোটেলে রেখে প্রেমিক উধাও হয়। তাই কোনো উপায় না পেয়ে বিয়ের দাবি নিয়ে প্রেমিকের বাড়ি অনশন করে প্রেমিকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেখানেও ঠাই মেলেনি তার। স্থানীয় ইউপি সদস্যের খবরে পুলিশ এসে প্রেমিকা ও তার বাবা-মাসহ থানা হেফাজতে নিয়ে যায়। এমন ঘটনা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের চরগঙ্গা গ্রামে ঘটেছে।

ওই প্রেমিকার নাম সানিয়া (ছদ্মনাম)। তার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার আমরাগাছিয়া ইউয়িনের কালিকাবাড়ি গ্রামে। তিনি বর্তমানে ঢাকার যাত্রাবাড়ির ডগাই বাজারে বসবাস করছেন। আর প্রেমিকের নাম লিমন। বাড়ি রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের চরগঙ্গা গ্রামে এবং তিনি ওই গ্রামের বেল্লাল হাওলাদার। তারা দু’জনই অনার্স পড়ুয়া।

এদিকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আগে পুরো এ ঘটনার বর্ণনা প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান সানিয়া। এ কথোপকথনের অডিও ক্লিপ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে। সানিয়ার দাবি, ৫ বছর ধরে লিমনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক। ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয়। শারীরিক সম্পর্কে গড়ায় দেড় বছর। বিভিন্ন সময় তারা ঢাকায় দেখা করতেন। সর্বশেষ ১৮ আগস্ট থেকে পটুয়াখালী ও বরিশাল লিমনের সঙ্গে আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছিলেন। বিষয়টি লিমনের পরিবার জানতে পারে। পরে সানিয়াকে বরিশাল রেখে লিমন পালিয়ে যায়। কোনো উপায় না পেয়ে লিমনের বাড়িতে চলে আসেন সানিয়া। সেখান থেকে স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আমিন ও লিমনের মামা বাহাদুর শিকদার এসে সানিয়াকে নিয়ে যান। পরে সানিয়ার বাবা-মাকে খবর দেন। বাবা-মা আসলে সানিয়াকেসহ তাদের আটকে রাখে। তাই অসহায় সানিয়া মুঠোফোনে সাংবাদিকদের সহযোহিতা চান।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার দুপুরে বিয়ের দাবিতে লিমনের বাড়িতে অবস্থান নেয় ওই মেয়ে। লিমনের পরিবার স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আমিনকে বিষয়টি জানায়। পরে নুরুল আমিন এসে মেয়েটিকে নিয়ে সাবেক ইউপি সদস্য মাসুদ মেম্বরের চরহালিম গ্রামের বাড়িতে রাখেন। পরে ওই ইউপি সদস্য মেয়ের পরিবারকে খবর দিলে শনিবার সকাল ১০ টায় বাবা-মা আসেন। এরপর সানিয়াকে ঢাকা পাঠানোর জন্য আপস-মিমাংসার অনেক চেষ্টা করলেও কোনো সুরহা হয়নি। সানিয়া কোনোমতেই এলাকা ছাড়তে রাজি হননি। একারণে সানিয়া ও তার বাবা-মাকে অবরুদ্ধ করে রাখে লিমনের পরিবার। বিষয়টি জানতে পেরে শনিবার রাত ৯ টার দিকে রাঙ্গাবালী থানা পুলিশ গিয়ে চরহালিম গ্রাম থেকে ওই মেয়ে এবং তার বাবা মাকে উদ্ধার করে। এ সময় সেই বাড়িতে শত শত মানুষ জড়ো হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আমিন বলেন, বিষয়টি সামাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে পুলিশকে জানিয়েছি। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

রাঙ্গাবালী থানায় অবস্থানকালে সানিয়ার বাবা-মা বলেন, মেয়ে ঘর থেকে প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে বের হয়। পরে নিখোঁজ মেয়ের সন্ধান পেয়ে ছুঁটে এসে এ ঘটনা জানতে পারেন তারা। যদিও লিমনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আগে থেকেই সানিয়ার মা জানতেন। পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন রবিবার সকালে সানিয়া মুঠোফোনে বলেন, আমরা পটুয়াখালী যাচ্ছি। মামলা করতে।

রাঙ্গাবালী থানার ওসি আলী আহম্মেদ বলেন, সিনিয়র অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ হেফাজতে রবিবার সকালে ওই মেয়ে ও তার বাবা-মাকে পটুয়াখালী সদর থানায় পাঠানো হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech