ডেস্ক রিপোর্ট :
প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘণ্টায় এর গতিবেগ অনুযায়ী সন্ধ্যা নাগাদ এটি আরও ঘনিয়ে এসেছে। এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ জেবুন্নেছা এনটিভি অনলাইনকে সন্ধ্যা ৭টা বলেন, ‘দুপুরে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দূরে মোখা অবস্থান ছিল। রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে এটি আরও কত কাছে এসেছে তা বলা যাবে।’
জেবুন্নেসা বলেন, ‘চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়টি।’
আজ শনিবার (১৩ মে) দুপরে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সমুদ্র সতর্কবার্তার ১৫ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতেও এসব তথ্য জানানো হয়। বলা হয়েছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দক্ষিণ উপকূল এলাকা দিয়ে এগিয়ে আসছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা। এর পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছে। মহাবিপদ সংকেতের পাশাপাশি তিন বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রোববার (১৪ মে) সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ এবং বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে আট থেকে ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ এবং বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পাঁচ থেকে সাত ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিলিমিটার) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে।