ডেস্ক রিপোর্ট :
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তৃতীয় বারের মতো বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক। এক লাখ ৫৪ হাজার ৮২৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, বরিশাল পেয়েছে নতুন নগরপিতা। সেখানে হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমকে বিপুল ভোটে হারিয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ।
দুই সিটিতে আজ সোমবার (১২ জুন) সকাল ৮টা থেকে সবকয়টি কেন্দ্রে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) শুরু হয় ভোটগ্রহণ, শেষ হয় বিকেল ৪টায়। এরপর শুরু হয় ভোট গণনা। রাত ৯টার দিকে খুলনার ২৮৯ কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
বেসরকারি ওই ফলাফলে জানা যায়, মেয়র পদে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ মনোনীত তালুকদার আব্দুল খালেক বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন এক লাখ ৫৪ হাজার ৮২৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলনের আব্দুল আউয়াল হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৬০ হাজার ৬৪ ভোট। অর্থাৎ, ৯৪ হাজার ৭৬১ ভোটে বিজয়ী হন খালেক।
খুলনা সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। আওয়ামী লীগের তালুকদার আব্দুল খালেক নৌকা প্রতীকে, জাতীয় পার্টির (জাপা) শফিকুল ইসলাম মধু লাঙ্গল প্রতীকে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আব্দুল আউয়াল হাতপাখা প্রতীকে ও জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন গোলাপ ফুল প্রতীক এবং এস এম শফিকুর রহমান টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এবার খুলনা সিটিতে মোট ভোটার ছিলেন পাঁচ লাখ ৩৫ হাজার ৫২২ জন। যদিও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বলেন, ‘খুলনাতে সম্ভব্য উপস্থিতি ৪২ থেকে ৪৫ শতাংশের মধ্যে। এটা চূড়ান্ত নয়। প্লাস-মাইনাস হতে পারে। কাজেই সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারব না।’
নির্বাচনি আচরণবিধি প্রতিপালনের জন্য ৪৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়। এ ছাড়া সংক্ষিপ্ত বিচারকাজ সম্পন্ন করতে দায়িত্ব পালন করছেন ১০ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট। ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে নির্বাচনি এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছিল ১১ প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের ১৬টি টিম, পুলিশ, এপিবিএন, আনসারের ৪৯টি টিম।
অন্যদিকে, বরিশাল সিটিতে বেসরকারিভাবে নগরপিতা নির্বাচিত হয়েছেন আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ। রাত ৮টার দিকে এই ঘোষণা দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। যদিও তিনি ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন।
বেসরকারি ফল বলছে, বরিশালে মোট ১২৬টি কেন্দ্রের মধ্যে নতুন নগরপিতা পেয়েছেন ৮৭ হাজার ৭৫২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাতপাখার প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৩৪৫ ভোট। অর্থাৎ, ৫৩ হাজার ৪০৭ ভোটে জয়লাভ করেছেন নৌকার প্রার্থী।
এই সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে লড়েছেন সাতজন। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস, জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতীকের প্রার্থী মিজানুর রহমান বাচ্চু, টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন, হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আসাদুজ্জামান ও হরিণ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী হোসেন হাওলাদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সংরক্ষিত ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ভোটের মাঠে রয়েছেন ১৫৮ জন প্রার্থী। সাধারণ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ১১৬ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ৪২ জন।
ইসি সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনে দুই লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন ভোটার ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। মোট ১২৬টি কেন্দ্রের ৮৯৪টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ করা হয়।
এ নির্বাচনি এলাকায় ৩০ জন নির্বাহী ও ১০ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেন। ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে মোতায়েন করা হয় ১০ প্লাটুন বিজিবি, তিন সেকশন কোস্টগার্ড, র্যাবের ১৬টি টিম, পুলিশ-এপিবিএন-ব্যাটালিয়ন আনসারের ৪৩টি টিম। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এবং নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা ভোটের দুদিন পর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।