ডেস্ক রিপোর্ট :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে হবে এই দৈন্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা ভোগে না। আমার কাছে ক্ষমতা বড় না, দেশের স্বার্থ বড়।’
রবিবার নরসিংদী জেলায় ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি।
এরপর সেখানে আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে আমেরিকার গ্যাস বিক্রি প্রস্তাব প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
১৯৯৬ সালের মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। কিন্তু আওয়ামী লীগই ভোট বেশি পেয়েছিল, জনগণের সমর্থন ছিল। অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন যদি হতো আওয়ামী লীগ কিন্তু সরকার গঠন করতো। কিন্তু একটা বিরূপ পরিবেশের সম্মুখীন হই এ বিষয়টা অনেকেই জানেন না। সেই সময় আমার কাছে আমেরিকার পক্ষ থেকে একটা প্রস্তাব আসে বাংলাদেশের গ্যাস বিক্রি করতে হবে এবং ভারত সেই গ্যাস কিনবে। আমি রাজি হইনি। কারণ আমাদের যে প্রাকৃতিক গ্যাস, সেটা কতটুকু আছে আমরা জানি না।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি তাদের বলেছিলাম আপনারা সার্ভে করে দেন কত গ্যাস আছে আমি দেখবো। দেশের মানুষ এই গ্যাস ব্যবহার করবে। আমাদের সার কারখানা করতে হবে। পেট্রো কেমিক্যাল, বিদ্যুৎ উৎপাদন, ঘরে গাস দিতে হবে সেগুলো আগে করবো। এগুলো করার পর যদি অতিরিক্ত থাকে সেখানে আমি ৫০ বছরের মজুদ রাখবো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। অতিরিক্ত টুকু বিক্রি করবো, তার বাইরে নয়।
তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচনে হারাবার জন্য শুধু বিদেশিদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমার দেশেরও কিছু জ্ঞানী মুরুব্বি তারাও যেন উঠে পড়ে লাগলেন কীভাবে আওয়ামী লীগকে হারানো যায়। জোর করেই নির্বাচন দেয়, আমরা আসতে পারিনি। আমেরিকার রাষ্ট্রপতি আমাদের দেশে এসেছিলেন, আমাকে দাওয়াত দিয়ে নিয়েছিল একই প্রস্তাব (দেওয়া হয়)। পরবর্তীতে লতিফুর রহমান যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হয় তার বাড়িতে আমাদের দাওয়াত দিয়েছিল। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমি ও আমার পার্টির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান আর বিএনপি থেকে খালেদা জিয়া ও মান্নান ভুইয়া (দাওয়াতে অংশ নেয়)। নরসিংদীতে এসেছি কথাগুলো মনে পড়ছে। দাওয়াত দেওয়ার পর সেখানে জিমি কার্টার আসেন দূত হিসেবে, একই প্রস্তাব। আমি আমার একই কথা বলেছি। তাছাড়া দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে হবে এই দৈন্যে অনন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা ভোগে না, আমার কাছে ক্ষমতা বড় না, দেশের স্বার্থেই বড়।
তিনি বলেন, চিন্তা করেন সেদিন যদি আমি গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হতাম তাহলে আজকে এই এতো চমৎকার সার কারখানা কি আমরা করতো পারতাম? কোনো দিনই হতো না। কিন্তু খালেদা জিয়া রাজি হয়ে গিয়েছিলেন এবং আমার চোখের সামনেই যিনি আমেরিকা থেকে এসেছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি তিনি তার পিঠে হাত দিয়ে বেশ বাহবাও দিয়েছিলেন। তখন আমি জিল্লুর রহমান সাহেবকে বলেছিলাম চাচা এখন চলেন আমরা বুঝতে পেরেছি কি হবে। কিন্তু আমি এটা কেয়ার করি না। আমরা চলে এসেছিলাম।
শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুনের সভাপতিত্বে এ সুধী সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা প্রমুখ। এসময় উপস্থিতি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার।