ডেস্ক রিপোর্ট :
রাজধানীর অদূরে পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে আজ রোববার (২১ জানুয়ারি) ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেলা ১২টা ৫মিনিটে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি মেলার উদ্বোধন করেন।
এবারের মেলা প্রাঙ্গণকে দৃষ্টিনন্দন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে সামনে তুলে আনার জন্য মেলার প্রবেশদ্বার নির্মাণ করা হয়েছে কর্ণফুলী টানেলের আদলে। এক পাশে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও অন্য পাশে বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের প্রতিচ্ছবি রাখা হয়েছে।
মেলা চলবে ২১ জানুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বাণিজ্য মেলা খোলা থাকবে। তবে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা চলবে। মেলায় প্রবেশ মূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৫০টাকা এবং শিশুদের জন্য ২৫ টাকা।
মেলায় যাতায়াতের সুবিধার জন্য ফার্মগেট থেকে বাসের ব্যবস্থা থাকবে। উত্তরা থেকে যারা মেলায় আসবে, তারা যাতে মেট্রোরেলে এসে ফার্মগেট থেকে বাসে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে সোজা মেলায় চলে আসতে পারেন, সেই সুবিধা রাখা হয়েছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তা এবং আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্তসংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্য মেলা প্রাঙ্গণ ও বাইরে নিয়মিত টহল দেবে।
এবারের বাণিজ্য মেলায় দেশ-বিদেশের মোট ৩৫১টি স্টল,প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন থাকছে। এ ছাড়া থাকছে রেস্তোরাঁ, মসজিদ, ব্যাংক, এটিএম বুথ, শিশু পার্ক, মা ও শিশু কেন্দ্র।। বরাবরের মতো ভারত, পাকিস্তান, ইরান, তুরস্ক ও থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যবসায়ীরা এবারের মেলায় অংশ নেবেন। মেলায় এসব দেশের বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স, ফার্নিচার, পাটজাত পণ্য, গৃহসামগ্রী, চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারি ওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল, টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি পণ্য মেলায় প্রদর্শিত হবে। এ ছাড়া দেশের উদ্যোক্তারাও তাদের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করবেন।
মেলায় আগত দর্শনার্থীদের যেন প্রতারিত না হয় সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ নজরদারি রয়েছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করা হবে। এব্যাপারে ভোক্তা অধিকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কড়া নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে মেলায় অভিযোগ বক্স ও হেল্প ডেস্ক খোলা রাখার ব্যবস্থা আছে। অভিযোগ পেলেই যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাধারণত প্রতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে বাণিজ্য মেলা শুরু হয়। কিন্তু দেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে এবার সময়মতো শুরু হয়নি। নতুন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে মেলার নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়। প্রতি বছর মেলা শুরুর প্রায় তিন মাস আগে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য নোটিশ দিয়ে থাকে সরকার। কিন্তু এবার তা দেওয়া হয় এক সপ্তাহ আগে। এবারে মেলার আয়োজক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
২০২২ সাল থেকে পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চলতি বছর সেখানে তৃতীয়বারের মতো ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর আগে ঢাকার শেরেবাংলা নগরে বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হতো। মূলত জনদুর্ভোগ এড়াতে বাণিজ্য মেলা মূল শহর থেকে পূর্বাচলে স্থানান্তর করে সরকার। ১৯৯৫ সাল থেকে বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে আসছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবি।