ডেস্ক রিপোর্ট :
পবিত্র শবে মেরাজ আজ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি)। এই রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, নফল নামাজ আদায়, জিকির-আজকার, দোয়া-দরুদ ও ইবাদত-বন্দেগি করবেন।
লাইলাতুল মেরাজ বা মেরাজের রজনিকেই সচরাচর ‘শবে মেরাজ’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ফার্সি শব্দ ‘শব’ অর্থ রাত। আর আরবি ‘মেরাজ’ অর্থ ঊর্ধ্বগমন। আর তাই ‘শবে মেরাজ’ অর্থ ঊর্ধ্ব গমনের রাত। ইসলাম ধর্মমতে, এ মহিমান্বিত রাতে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সা.) মহান আলাহ তা’আলার ইচ্ছায় ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ করে তাঁর সাক্ষাৎ লাভ করেন।
ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী, হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর নবুয়তপ্রাপ্তির একাদশ বছর ৬২০ খ্রিষ্টাব্দের রজব মাসের ২৬ তারিখের দিনগত রাতে হযরত জিব্রাঈল (আ.) এর সঙ্গে পবিত্র কাবা হতে ভূমধ্যসাগরের পূর্ব তীর ফিলিস্তিনে অবস্থিত পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস হয়ে সপ্তাকাশের ওপর সিদরাতুল মুনতাহা হয়ে ৭০ হাজার নূরের পর্দা পেরিয়ে আরশে আজিমে মহান আল্লাহর দিদার লাভ করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি অবলোকন করেন সৃষ্টি জগতের সমস্ত কিছুর অপার রহস্য।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এর জীবনের সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা হচ্ছে ‘মেরাজ’। মেরাজ ইসলামের ইতিহাসে এমনকি পুরো নবুয়তের ইতিহাসেও এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। কারণ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও রাসুল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম ছাড়া অন্য কোনো নবী এ পরম সৌভাগ্য লাভ করতে পারেননি।
ইসলামে মেরাজের বিশেষ গুরুত্ব হচ্ছে, এ মেরাজের মাধ্যমেই ইসলাম ধর্মে নামাজ মুসলমানদের জন্য ফরজ হিসেবে নির্ধারণ করা হয় এবং দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান নির্দিষ্ট করা হয়।
মেরাজ রাসূলুল্লাহ (সা.) এর জীবনের অত্যতম ঘটনা। কুরআনে একাধিক স্থানে এ ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আয়ালা বলেন–
سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلا مِنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آَيَاتِنَا
‘‘পবিত্র তিনি যিনি তাঁর বান্দাকে রজনীযোগে ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখাবার জন্য।’’ (সুরা : বনী ইসরাইল : ০১)
এদিকে, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররামে পবিত্র শবে মেরাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য আলোচনা সভা ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া রাতভর দেশব্যাপী মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও মাগফেরাত কামনায় মসজিদ ও বাড়িতে ইবাদতে মশগুল থাকবেন মুসলমানরা।