ডেস্ক রিপোর্ট :
বিপিএলের দশম আসর শেষ হয়েছে গত শুক্রবার। মাঝে দিন দুয়েকের বিরতি শেষেই ফের মাঠে নেমে পড়লেন শান্ত-মাহমুদউল্লাহরা। এবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ সিরিজের ব্যস্ততা শুরু বাংলাদেশের। আগামীকাল (সোমবার) ৪ মার্চ চায়ের দেশ সিলেটে শুরু হচ্ছে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। খেলা শুরু সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়।
ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া কিংবা পাকিস্তান-ভারতের মতো না হলেও বর্তমান ক্রিকেটে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচও এখন দারুণ উপভোগ্য। ২০১৭ সালে নিদাহাস ট্রফি থেকেই শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের ‘দ্বৈরথ’ পায় নতুন রূপ। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে সাকিব-ম্যাথিউজ আউট বিতর্ক যে দ্বৈরথে বাড়তি মাত্রা যোগ করে।
আর মাত্র মাস তিনেক পরই যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বসবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেই আসরের প্রস্তুতি হিসেবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে বাংলাদেশ। ২০২২ সাল থেকে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে কোনো সিরিজ হারেনি চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। যা বাড়তি আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে শান্তদের। নতুন বছরের প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে সেই ধারাবাহিকতা ধরে মরিয়া বাংলাদেশ।
মাহমুদউল্লাহ-লিটনদের নিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ এক দল নিয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। যদিও প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েও চোটের কারণে ছিটকে গেছেন অফস্পিনার আলিস আল ইসলাম। তার পরিবর্তে দলে নেওয়া হয়েছে উইকেটরক্ষক ব্যাটার জাকির আলি অনিককে। যিনি একাদশে সুযোগ পেলে নিজেকে মেলে ধরতে চান।
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার দ্বৈরথকে পাশে রেখে জয়ের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টাই করতে চান অধিনায়ক শান্ত। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে শান্ত বলেন, ‘আমার মনে হয় খুব ভালো একটা সিরিজ। জেতার জন্য যা যা করার দরকার অবশ্যই সেটা করা উচিত। আর শ্রীলঙ্কার সাথে বাইরের বিষয় নিয়ে চিন্তা করছি না, যেটা অতীতে হয়েছে।’
লঙ্কানদের জন্য দুঃসংবাদ, আইসিসি নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রথম দুই ম্যাচে নিয়মিত অধিনায়ক হাসারাঙ্গাকে পাবে না শ্রীলঙ্কা। তার পরিবর্তে প্রথম দুই ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে নেতৃত্ব দেবেন সহ-অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কা। অবশ্য ট্রফি উন্মোচনে আসালাঙ্কা নয় ছিলেন হাসারাঙ্গাই।
বিশ্বকাপের আগে এই সিরিজকে পাখির চোখ করেছে শ্রীলঙ্কাও। জয় দিয়েই প্রস্তুতি সারতে মরিয়া দলটির প্রধান কোচ ক্রিস সিলভারউড। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সিরিজ হতে যাচ্ছে। অতীতে কি হয়েছে সেটা নিয়ে ভাবতে চাই না। সামনে বিশ্বকাপ, আমরা সেটা নিয়েই বেশি মনোযোগী। সেরা স্কোয়াড বাছাই করতে এই সিরিজটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ভালো দল, তবে আমার কাছে নিজেদেরকেই ফেবারিট মনে হয়। এটাও সত্য, জিততে হলে আমাদের সেরাটাই দিতে হবে।’
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মাঠ সবসময় ব্যাটিংবান্ধব। এই মাঠে সবশেষ গত বছরের জুলাইতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ। ২০১৮-২০২৩ এই সময়ের মধ্যে এই মাঠে খেলা চার ম্যাচের মধ্যে দুটিতে জয় ও দুটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ সংগ্রহ শ্রীলঙ্কার। ২০১৮ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২১০ রান করেছিল লঙ্কানরা। তবে, এই মাঠে অনুষ্ঠিত ৪৮ ম্যাচের মধ্যে ২৮টিতেই আগে ব্যাটিং করা দল জিতেছে, সেই হিসেবে টস বড় একটি ভূমিকা রাখতে পারে এই ম্যাচে।
২০ ওভারের এই ফরম্যাটে দুটি দল এখন পর্যন্ত ১৩ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে, যার মধ্যে শ্রীলঙ্কা জিতেছে নয়টি, আর বাংলাদেশ চারটি। এবার কি ব্যবধান কমাতে পারবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল, নাকি লঙ্কানরা আরেকটু এগিয়ে যাবে? তা তো সময়ই বলে দেবে।