বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

ধনীদের মাছ ইলিশ !

ধনীদের মাছ ইলিশ !

ডেস্ক রিপোর্ট :
কিছু দিন আগেও বাংলা বর্ষবরণের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল পান্তা-ইলিশ। পহেলা বৈশাখে ঘরে-বাইরে সবখানে উৎসবমুখর পরিবেশে ছিল পান্তা-ইলিশের পরিবেশনা। যদিও নানা আলোচনা-সমালোচনায় বাইরে এখন তেমন আর বেচাবিক্রি হয় না। তবে, এর প্রচলন যে বন্ধ হয়নি, তা বোঝা যায় বাংলা নববর্ষের আগে ইলিশের বাজারে গেলে। চড়া দাম দিয়েও অনেককে কিনতে দেখা গেছে ইলিশ। আবার দামদর করে অনেকেই যাচ্ছেন ফিরে। তাদের দাবি—এই চড়া দামে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা ইলিশ খেতে পারলেও নিম্ন মধ্যবিত্তদের পাতে মিলবে না জাতীয় মাছ। অনেকেই আক্ষেপ করে বলেন—ইলিশ এখন ধনীদের মাছ।

কাওরানবাজারে ইলিশ কিনতে এসেছেন হাবিবুর রহমান। তিনি কাপড়ের ব্যবসায়ী। এনটিভি অনলাইনকে তিনি বলেন, ব্যস্ততার কারণে ঈদের আগে ইলিশ মাছ কিনতে পারিনি। সকালে হাতিরপুল বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ খুঁজেছি, কিন্তু পাইনি। পরে কাওরানবাজারে এসেছি। এখানে এসে দুইটি ইলিশ মাছ কিনেছি। দুটির ওজন হয়েছে দুই কেজি ৮০০ গ্রাম। দাম নিয়েছে ছয় হাজার ২০০ টাকা।

কাপ্তানবাজারের ইলিশ কিনতে আসা রহমত উল্লাহ বলেন, ছেলেমেয়ে পহেলা বৈশাখে ইলিশ মাছ খাবে। এলাকায় বাজারে ইলিশ নেই। তাই নিরুপায় হয়ে কাওরানবাজারে এসেছি। ৯০০ গ্রামে একটি ইলিশ কিনেছি। দাম নিয়েছে এক হাজার ৬০০ টাকা।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের ইলিশ মাছ বিক্রেতারা জানান, ঈদের ছুটিতে অফিস-আদালত বন্ধ। রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলো এখনও বন্ধের রেশ কাটেনি। কাঁচাবাজারগুলোর দোকানপাট এখনও সেভাবে খোলেনি। যেসব গুটি কয়েক দোকান খুলেছে, সেখানে ইলিশের দাম বাড়তি। বর্তমানে ইলিশ সরবরাহ কম জানিয়ে তারা বলেন, এতে মাছের দাম বেশি হতে পারে। তবে, প্রতি বছর পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে ইলিশ কেনার চাহিদা বেশি থাকে। সেই তুলনায় অন্যান্য সময়ে চেয়ে এসময় ইলিশের দাম বেশিই থাকে।

কারওয়ানবাজার ও কাপ্তানবাজার ঘুরে দেখা যায়, ৫০০ গ্রাম ওজনের বেশি ইলিশের প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে  এক হাজার ২০০ টাকা। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশের প্রতি কেজির দাম চাচ্ছে দেড় হাজার টাকা ওপরে। এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম চাচ্ছে দুই হাজার ৪০০ হাজার টাকা ওপরে। এক কেজি ২০০ গ্রামের ওজনের বেশি ইলিশের দাম চাচ্ছে তিন হাজার টাকার ওপরে। বাজারভেদে ইলিশের দাম কম বেশি দেখা গেছে।

বাজারে ইলিশ কম জানিয়ে কাওরানবাজারের জামসেদ ও কাপ্তান বাজারের আশরাফসহ বেশ কয়েকজন বিক্রেতা বলেন, সারা বছরের তুলনায় পহেলা বৈশাখ ঘিরে ইলিশের বাড়তি চাহিদা থাকে। এতে আমাদের কিছু করার নেই। পহেলা বৈশাখের আগে প্রতিবারই দাম বাড়ে। এটা সাধারণ বিষয়।

বিক্রেতারা আরও বলেন, বর্তমানে বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম। এ ছাড়া বেশিরভাগ মাছ দোকান বন্ধ। প্রতি বাজারে গুটি কয়েক দোকান খোলা হয়েছে। সব দোকান খোলা থাকলে ইলিশের দাম কমে পাওয়া যেত। যাত্রবাড়ী কাঁচাবাজারের মাছ ব্যবসায়ী আলমগীর বলেন, পহেলা বৈশাখ রমজান মাসে পড়ায় এবার ইলিশের বেচাকেনা তেমন নেই। গুটি কয়েক দোকান খোলা হয়েছে। তারপর ইলিশের সরবরাহ কম। সবমিলিয়ে ইলিশ দাম বাজার বাড়তি।

পহেলা বৈশাখ আসার বেশ কিছুদিন আগে থেকে ইলিশে বাজার ভরা থাকত জানিয়ে ক্রেতা নাজমুল বলেন, পাড়া-মহল্লায়ও ফেরি করে ইলিশ বিক্রি করতেন বিক্রেতারা। দাম নাগালে থাকায় সব শ্রেণিপেশার মানুষ বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশ খেতেন। গতকয়েক বছর পহেলা বৈশাখের সেই আমেজ নেই। কারণ, ইলিশের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।

ইলিশ ধনীদের মাছ দাবি করে ক্রেতা হুমায়ন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, এখন আর নিম্ন মধ্যবিত্তরা ইলিশ পাতে পায় না। বাজারে দেখলেও কেনার সাহস করে না। বছর আগে ৬০০ টাকা দিয়ে যে ইলিশ কিনেছি, এখন সেই ইলিশ কিনলে গুনতে হচ্ছে দেড়-দুই হাজার টাকা। তাই মন চাইলেও সাহস পায় না। তাই এবারে রুই মাছ দিয়ে পহেলা বৈশাখ কাঁটিয়ে দেব।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech