ডেস্ক রিপোর্ট :
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ হয়েছে। ট্রাম্পের উচ্চশিক্ষা নীতির বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এপি জানায়, বিক্ষোভগুলোতে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধ্যাপক ও শিক্ষার্থীরা, যারা মনে করছেন, অনুদানে বিশাল কাটছাঁট, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার এবং গাযায় যুদ্ধ নিয়ে বাকস্বাধীনতায় টুঁটি চেপে ধরার মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার ওপর বড় ধরনের আক্রমণ করা হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ হয়েছে। হার্ভার্ডের বিষয়ে ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বলেছে, প্রতিষ্ঠানটিকে চুক্তি ও অনুদান হিসেবে প্রদেয় দুই দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার অর্থ অবরুদ্ধ করা হবে।
হার্ভার্ডের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী রাখার সামর্থ্য কেড়ে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছে প্রশাসন। ম্যাসাচুসেটসের ক্যামব্রিজে বিক্ষোভে অংশ নিয়ে হার্ভার্ডের গভর্নমেন্ট বিভাগের গ্র্যাজুয়েট পর্যায়ের শিক্ষার্থী রোচেল সান জানান, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পক্ষে দাঁড়াতে তিনি বিক্ষোভে যুক্ত হয়েছেন। কারণ ‘মানব জ্ঞানের সীমা ছাড়িয়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচনে’ হার্ভার্ডের যে মিশন রয়েছে, তার অবিচ্ছেদ্য অংশ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা।
রাজনৈতিক এজেন্ডার অংশ হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসন অ্যামেরিকার বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফেডারেল সরকারের অনুদানকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। সিরিজ হুমকির পর অনুদান স্থগিত করার মাধ্যমে ক্যাম্পাসগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে প্রশাসন।
গত বছর নির্বাচনি প্রচারে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, যেসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্রিটিক্যাল রেইস থিওরি, ‘ট্রান্সজেন্ডার উন্মত্ততা’ এবং অন্যান্য ‘অনুপযুক্ত’ বর্ণ, যৌন অথবা রাজনৈতিক কনটেন্টকে প্রসারে কাজ করে, সেগুলোর ফেডারেল অনুদানে কাটছাঁট জারি থাকবে।
অন্যদিকে যেসব ইউনিভার্সিটিতে প্যালেস্টাইনের গাযায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে গত বছর বিক্ষোভ হয়েছে, সেগুলোকে কড়া নজরদারির মধ্যে রাখেন রিপাবলিকান কর্মকর্তারা। ট্রাম্প ও অন্য কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা হামাসপন্থি। যদিও বিক্ষোভকারীদের অনেকে বলেছেন, তারা যুদ্ধে ইযরায়েলের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নেমেছেন।
গাযা যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভকারীদের কাউকে কাউকে কাস্টডিতে নেওয়া হয়েছে কিংবা বিতাড়িত করা হয়েছে। ভিসা বাতিল হওয়ার কথা জেনে কেউ কেউ অ্যামেরিকা ছেড়ে চলে গেছেন।
অন্য ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া-বার্কলেতে বিক্ষোভে অংশ নেন ৪৫০ জনের মতো মানুষ, যাদের মধ্যে ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সাবেক লেবার সেক্রেটারি রবার্ট রিচ। তিনি ট্রাম্পকে তোষামোদের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আপনি একজন অত্যাচারী শাসককে তুষ্ট করতে পারবেন না। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি একজন অত্যাচারী শাসককে তুষ্ট করতে চেয়েছে। এটি কাজ করেনি।’
নিউ ইয়র্কের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি প্রাথমিকভাবে ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু দাবি মেনে নিতে সম্মত হয়েছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট সোমবার দেওয়া এক বার্তায় দৃঢ় অবস্থান নিয়ে বলেন, কিছু কিছু দাবি আলোচনার বিষয় হতে পারে না।
কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভে অংশ নেন প্রায় ১৫০ জন মানুষ। গত বছর এ প্রতিষ্ঠানটিতে প্যালেস্টাইনপন্থি বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছিল। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার একটি ভবনের বাইরের চত্বরে দাঁড়িয়ে নানা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন বিক্ষোভকারীরা, যেগুলোর মধ্যে ছিল ‘ইউনিভার্সিটিগুলোর ওপর যুদ্ধ বন্ধ করো’, ‘ফ্যাসিস্টদের অস্ত্র হলো সেন্সরশিপ’।