নিজস্ব প্রতিবেদক:
বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন আদালত।
আজ বুধবার দুপুর ২টার দিকে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান এ চার্জ গঠন করেন। একই সাথে এ মামলার প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৮ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে, চার্জ গঠন উপলক্ষে এ মামলায় কারাগারে থাকা প্রাপ্তবয়স্ক ৮ আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। বাবার সাথে আদালতে হাজির হন এ মামলায় জামিনে থাকা মিন্নি। পরে আসামিদের উপস্থিতিতে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পড়ে শুনানো হয়। চার্জ গঠন শেষে কারাগারে থাকা ৮ আসামিকে আবারও কারাগারেই পাঠানো হয়।
যেসব আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে তারা হলেন- রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি (২৩), আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), মো. হাসান (১৯), মো. মুসা (২২), আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি (১৯), রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), মো. সাগর (১৯), কামরুল ইসলাম সাইমুন (২১)।
এক থেকে সাত নম্বর পর্যন্ত অভিযুক্ত সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে ৩০২ এবং ৩৪ ধারায় চার্জ গঠন করা হয়েছে। এছাড়া ৮ এবং ১০ নম্বর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্র এবং আসামিদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে ২১২ এবং ১২০ বি ১ ধারা অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এছাড়া এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক নয় নম্বর আসামির বিরুদ্ধে আসামিদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রিফাত হত্যা মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী মজিবুল হক কিসলু বলেন, দীর্ঘ সময় শুনানি শেষে রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৮ জানুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ মামলার ৩৭ আসামির সাক্ষগ্রহণ করবেন আদালত। এছাড়াও সাইমুন নামে এক আসামির জামিনের আবেদন করেছিলেন তার আইনজীবী। কিন্তু তা নামঞ্জুর করেন আদালত। আর প্রত্যেক আসামির আইনজীবীরা মামলা থেকে তার মক্কেলকে অব্যাহতি প্রদানের আবেদন করেন। আদালত সেটাও নামঞ্জুর করেন।
এর আগে, গত ৬ নভেম্বর রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের অভিযোগপত্র চার্জ গঠনসহ বিচারের জন্য প্রস্তুত করে জেলা ও দায়রা জজ আদাতনে প্রেরণ করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
গত ২৬ জুন বরগুনার সরকারি কলেজের সামনে রিফাত হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর বিকেলে ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক; এ দু ভাগে বিভক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন।
এ মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনো পলাতক রয়েছেন। এছাড়া নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি উচ্চ আদালতের নির্দেশে জামিনে রয়েছেন। আর অন্য আসামিরা কারাগারে রয়েছেন।