নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ১১ কর্মচারীকে বারিধারার বাসভবন ‘প্রেসিডেন্ট পার্ক’ থেকে বিদায় দেয়া হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর ধরে এরশাদের বাসভবনে কাজ করে তার বিশ্বস্ত হয়ে উঠেছিলেন।
এরশাদের আস্থাভাজন ওই সব কর্মচারী হলেন গাড়িচালক আবদুল আউয়াল, আজিজুর রহমান ও আবদুল মান্না, ব্যক্তিগত সহকারী আবদুল ওয়াহাব ও মতিউর রহমান, পাচক ডিউক রোজারিও ও বিপ্লব হোসেন, ক্যামেরাম্যান আবদুস সাত্তার, কাজের বুয়া নিপা ও রুবিনা এবং মালি আতাউর রহমান।
শেষ জীবনের প্রায় তিন বছর এরশাদ ছিলেন খুবই অসুস্থ। বিদায়ী কর্মচারীরা গণমাধ্যমকে জানান, এ সময়ে প্রায় প্রতিদিন শয্যায় মলমূত্র ত্যাগ করতেন এরশাদ। তাকে দেখভাল করার আপন কেউ থাকতেন না বারিধারার বাসায়। মলমূত্র পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে সাবেক রাষ্ট্রপতির ওষুধ খাওয়ানো এবং সেবা শুশ্রূষা করতেন কর্মচারীরাই। মাঝেমধ্যে গভীর রাতে চালকদের ডেকে বেরিয়ে পড়তেন এরশাদ। চিৎকার করে বলতেন, দ্রুত গাড়ি বের করো, বাসায় থাকলে আমি মারা যাব। সে দিনগুলোতে সারারাত জেগে থাকতে হতো বাসার ১১ কর্মচারীকে।
এরশাদের দুর্দিনে পাশে থাকা ওই কর্মচারীরা চাকরি হারিয়েছেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক এরশাদের সন্তান এরিক এরশাদের মাতৃত্বের দাবি নিয়ে ওই বাসভবনে প্রবেশের পর থেকে তিনি বিদায় দেয়া শুরু করেন কর্মচারীদের। তাদের বলা হয়েছে, ১ জানুয়ারি থেকে বারিধারার বাসায় প্রবেশ না করতে।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, এরশাদের এসব কর্মচারীকে বিদায় দিয়ে বিদিশা সিদ্দিক তার নিজস্ব লোকদের ওই পদগুলোতে নিয়োগ দিয়েছেন। এরশাদের বাসার কর্মচারীদের বেতন দেয়া হয় এরশাদ গঠিত ট্রাস্ট থেকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টের পরিচালক মেজর (অব.) খালেদ আকতার বলেন, বারিধারার বাসভবন থেকে এরশাদের বিশ্বস্ত কর্মচারী, যারা সাবেক রাষ্ট্রপতির জীবনের শেষ দিনগুলোতে তার পাশে থেকে সেবা দিয়েছেন বিদিশা তাদের সবাইকে বিদায় দিয়েছেন। ব্যাপারটা খুবই দুঃখজনক। আমরা ট্রাস্ট থেকে তাদের বেতন দিতাম। এখন বিদিশা তার নিজস্ব লোক নিয়োগ দিয়েছেন। আমরা বিদিশার লোকদের বেতন দেব কি না? মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেব।