নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনাভাইরাস আতংকে চীনের উহানে থাকা ৩৬১ বাংলাদেশিকে নিয়ে আসতে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ উড়োজাহাজ বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ঢাকা ছেড়েছে।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে রাতে ২টার দিকে ওই ফ্লাইটটি ঢাকায় ফিরে আসবে। অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদেরও বিভিন্ন স্থান থেকে উহান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে গেছে চীনে বাংলাদেশ দূতাবাস। দেশে ফেরার পর বাংলাদেশিদের প্রথমে কোয়ারেন্টাইনের জন্য কুর্মিটোলা হজক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান জানান, ‘চীনের উদ্দেশে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি ৬টা ৫ মিনিটে ঢাকা ছেড়েছে।’
চীনে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ২১৩ জন মারা গেছে। এ ছাড়া এ ভাইরাসে ৯ হাজার ৭শ’ জন আক্রান্ত হয়েছে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ঘটনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোকাব্বির হোসেন বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশিদের আনতে আমাদের একটি ফ্লাইট চীনে যাচ্ছে। সেখানে যেতে প্রায় ৪ ঘণ্টা সময় লাগবে। এরপর বাংলাদেশিদের নিয়ে ফের দেশে ফিরবে।’
এদিকে, চীনের উহানের বিভিন্ন স্থানে থাকা শিক্ষার্থীদেরও উহান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, উহান থেকে দেশের ফেরার পর স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন না বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। বিমানবন্দর থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হবে কুর্মিটোলা হজক্যাম্পে। সেখানে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থায় তাদের রাখা হবে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ১৪ দিন পর্যন্ত তাদের সেখানে রাখা হতে পারে।
চীন ফেরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রসঙ্গে আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘আশা করছি এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত কেউ নেই। এরপরও আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। হজক্যাম্পে তাদের রাখা হবে। সেখানে আমাদের চারটি মেডিক্যাল টিম থাকবে। তাদের সেখানে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।’ স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রাখার পর এসব শিক্ষার্থী বাড়ি ফিরতে পারবেন বলেও তিনি জানান।
এদিকে চীনে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা এক দিনেই ১৭০ থেকে বেড়ে হয়েছে ২১৩ জন। নতুন করে দুই হাজার মানুষের দেহে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, কেবল চীনেই আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ৭০০ জনে দাঁড়িয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেডরোস অ্যাডানম গ্যাব্রিয়াসুস বলেন, দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দেশগুলোতে এই ভাইরাস ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনাই আমাদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ। এটির বিস্তার যাতে আর ঘটতে না পারে, সেজন্য আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কেবল সবাই একসঙ্গে সক্রিয় হয়ে এটাকে বন্ধ করতে পারবে।