বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন চান জি এম কাদের

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন চান জি এম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সংসদ সদস্যদের ক্ষমতায়নে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন চান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের। তিনি বলেন, ৭০ অনুচ্ছেদের জন্য সংসদ সদস্যরা নিজেদের বিবেক বিচার বুদ্ধিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন না।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণে ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাব আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ প্রস্তাব করেন। এ সময় তিনি সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের প্রস্তাব করেন।

জি এম কাদের বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে সংসদ সদস্যদের দলীয় সিদ্ধান্তের পক্ষে অবস্থান নিতে হয়। না হলে সংসদ সদস্য পদ হারতে হয়। কিন্তু ওয়েস্ট মিনিস্টার পদ্ধতিতে কেবল মন্ত্রিসভার সদস্যরা ছাড়া বাকি সকলে বেসরকারি সদস্য। আমাদের কার্যপ্রণালী বিধিতেও এটি রয়েছে। মন্ত্রিসভার সদস্যরা ছাড়া বাকি সব সদস্যের সমন্বয়ে সরকারের প্রতিপক্ষ হিসেবে সংসদে ভূমিকা রাখেন।

তিনি বলেন, কেবল মন্ত্রী বাদে সরকারি ও বিরোধীদলের সকল সদস্য একক ও যৌথভাবে এ দায়িত্ব পালন করলে সংসদের কাছে সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যেতে পারে। কিন্তু সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ এখানে বাধার সৃষ্টি করছে। ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে সরকারি দলের সকল প্রস্তাবই সংসদে গ্রহণ করা হয়। সংসদ সদস্যরা নিজের বিবেক বিচার বুদ্ধি ও এলাকার জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন না।

বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, আমাদের সরকার প্রধান একই সঙ্গে সরকার প্রধান ও সংসদ প্রধান হিসেবে যা সুপারিশ করবেন সংসদে তা গ্রহণ হবে। সংবিধান তাকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের একক কর্তৃত্ব দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে সদস্যদের ভূমিকা গৌণ ও পরামর্শমূলক। সংসদ সদস্য নিজে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম নয়। সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন বা হ্যাঁ সূচক সম্মতি হচ্ছে তার কাজ। সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিলের সুযোগ তাদের নেই।

সংবিধানে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের বিধান থাকলেও তা বাস্তবায়ন অসম্ভব উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দেশের আত্ম-সামাজিক পরিস্থিতিতে ৭০ অনুচ্ছেদ সম্পূর্ণ বাদ দেয়াও বাস্তবসম্মত নয়। এ ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া ক্ষণে ক্ষণে বাধাগ্রস্ত হতে পারে, সরকারের স্থায়ীকাল অনিশ্চিত হওয়া বা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য সরকার গঠন বাজেট অনুমোদন ও অনাস্থা প্রস্তাব- এ তিনটি বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে মধ্যে ৭০ অনুচ্ছেদ সীমাবদ্ধ রাখা যেতে পারে। এতে সংসদ আরও বেশি শক্তিশালী ও কার্যকর হওয়ার সুযোগ থাকে।

জাতীয় পার্টির এ নেতা বলেন, আমাদের দেশে গণতন্ত্রায়ন নির্বাচনের ওপর বেশি নির্ভরশীল। এ জন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা। জাতীয় আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্ব নির্বাচন পদ্ধতি। এতে তুলনামূলকভাবে অনিয়মের সুযোগ কম। এতে ছোট ছোট দলগুলোর সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ থাকবে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই এ আনুপাতিক ভোট পদ্ধতি চালু রয়েছে।

জি এম কাদের বলেন, দেশে শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারের হার বেশি। প্রতি বছর তিন লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করে শ্রমবাজারে প্রবেশ করে। এর মধ্যে অর্ধেকের মতো বেকার থাকে।

মাদক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মাদক বাংলাদেশে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছে। দেশে মাদক ব্যবসা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। গত বছর ১০ হাজার কোটি টাকার মাদক কেনাবেচা হয়েছে। মাদক বিরোধী অভিযানে ২৬০ দিনে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে ২৯২ জন। এ ধারাবাহিকতায় বন্দুকযুদ্ধ ও সাঁড়াশি অভিযানের মধ্যেও মাদক আমদানি আগের বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

তিনি বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও রাজনীতিকদের মধ্যে সংশ্লিষ্টতা ও মদত থাকে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। যার কারণে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান সফল হয় না। মাদকের বিরুদ্ধে ভেতরে বাইরে শুদ্ধি অভিযান চালাতে হবে। কাউকে ছাড় দেয়া যাবে না।

করোনাভাইরাস নিয়ে তিনি বলেন, করোনাভাইরাস বর্তমানে বিশ্বে একটি আতঙ্কের নাম। প্রথমে চীনে হলেও বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এর বিস্তার ঘটছে। এটার শেষ কোথায় হবে তা বোঝা যাচ্ছে না। আশা করি, সরকার এ বিষয়ে সচেতন আছে। এটাকে মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

অষ্টম পে-স্কেল সম্পর্কে জি এম কাদের বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পে-স্কেলে সন্তোষজনক নয়। ১১-২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে। তাদের দাবির বিষয়টি সমাধান করা যেতে পারে বা নতুন পে-কমিশন গঠন করা যেতে পারে।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech