মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে দায়ের করা এক মানহানির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে স্থায়ী জামিন দেন হাইকোর্ট। তার জামিন আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি করে বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি এস এম মবিনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ বিষয়ে জারি করা রুল মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
পরে দুপুরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্থায়ী জামিন আদেশ প্রত্যাহার করে নিয়ে আদালতের অবকাশের এক সপ্তাহ পর আবারও এ বিষয়ে শুনানির দিন জন্য ধার্য করেছেন আদালত। আগামী ১৩ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে অবকাশকালীন ছুটি চলবে।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও এইচ এম কামরুজ্জামান মামুন।
পরে কায়সার কামাল বলেন, ‘সকালে হাইকোর্ট এ মামলায় রুল অ্যাবসুলিউট (মঞ্জুর) করে তাকে স্থায়ী জামিন দেন। দুপুরের পর আদালত ওই আইনসাইন অর্ডার রিকল (স্বাক্ষর না হওয়া আদেশ প্রত্যাহার) করে নিয়েছেন। একই সঙ্গে অবকাশের এক সপ্তাহ পর এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছেন।’
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম রাবেয়া।
জানা যায়, খালেদা জিয়া ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বির্তক রয়েছে বলে মন্তব্য করেন। ওই সমাবেশে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘তিনি স্বাধীনতা চাননি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ চাননি।’ এ বক্তব্যের জের ধরে নড়াইলের নড়াগাতি থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান ফারুকী ইমাম ওই বছরের ২৪ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নড়াইল সদর আমলি আদালতে মামলা করেন।
হাইকোর্ট ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট খালেদা জিয়াকে এ মামলায় অন্তবর্তীকালীন জামিন দেন। এ ছাড়া এ মামলায় কেন তাকে স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে রুল জারি করেন।
আজ সকাল ১১টার দিকে রুল যথাযথ ঘোষণা করে এ মামলায় তাকে স্থায়ী জামিন দেন। তবে এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন না। এ নিয়ে দুপুরের পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম রাবেয়া রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শুনে আদেশ দেওয়ার জন্য সকালে দেওয়া জামিন আদেশ প্রত্যাহারের আর্জি জানান। এ অবস্থায় হাইকোর্ট সকালে দেওয়া অস্বাক্ষরিত (আনসাইন) জামিন আদেশ প্রত্যাহার করে অবকাশের পরে পরবর্তী শুনানির জন্য ধার্য করেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ড হওয়ার পর থেকে খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন। এখন তার কারামুক্তির জন্য দণ্ডপ্রাপ্ত দুটি মামলায় জামিন প্রয়োজন।