নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশে করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও নয়জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে আরও দুজন মারা গেছেন। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আটজনে। এছাড়া সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন আরও চারজন। ফলে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ৩০।
শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। এতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, স্বাস্থ্য অধিদফতরের এমআইএস শাখার পরিচালক ডা. মো. হাবিবুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিংয়ের শুরুতে ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫৫৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয় ৪৩৪টি।
এরপর ফলাফল তুলে ধরে ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, যাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯ জনের। ৮ জন শনাক্ত হয়েছেন আইইডিসিআরের পরীক্ষায়। অন্যজন ঢাকার বাইরের ল্যাবে শনাক্ত হয়েছেন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০-এ।
আইইডিসিআর পরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন আগে থেকে আক্রান্ত ছিলেন, আরেকজন নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ছিলেন। একজনের বয়স ৯০ বছর এবং আরেকজনের ৬৮ বছর। একজন ঢাকার, আরেকজন ঢাকার বাইরের। একজন হৃদরোগী ছিলেন, আরেকজনের স্ট্রোক করার ইতিহাস ছিল।
ডা. ফ্লোরা বলেন, নতুন শনাক্ত রোগীদের মধ্যে পাঁচজন পূর্বে আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আক্রান্ত হয়েছেন। দুজন বিদেশ থেকে এসেছেন। আর দুজনের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আক্রান্ত নয়জনের দুজন শিশু, তিনজন ২০-৩০ বছর বয়সী, একজন ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সী, একজন ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সী, একজন ৫০ থেকে ৬০ বছর বয়সী এবং একজন সত্তরোর্ধ্ব রয়েছেন।
তিনি জানান, বর্তমানে মোট চিকিৎসাধীন রোগী ৩২ জন। এর মধ্যে ১২ জন বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ২০ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বের ২০৫টি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ১৮ হাজারের মতো মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন প্রায় ৬০ হাজার জন। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ২ লাখ ২৮ হাজারের বেশি মানুষ।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিনে দিনে সংক্রমণ বেড়েছে। সবশেষ হিসাবে করোনায় বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ জন। মারা গেছেন আটজন। এছাড়া সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৩০ জন।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে এই ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
ছুটির সময়ে অফিস-আদালত থেকে গণপরিবহন, সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরি সেবা এই বন্ধের বাইরে থাকছে। জনগণকে ঘরে রাখার জন্য মোতায়েন রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীও।