রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়নের যুগীরহাওলা গ্রামের বাসিন্দা ফোরকান হাওলাদার, তারা গাজী, রসুলবাড়িয়ার মনির হোসেন, ছোমেদ গাজী, সবুজ তালুকদার, নিজহাওলার আবদুল কাদের, চরকালকুনীর ইউসুফ আলী, উত্তরী পাড়ায় খলিল, রজব আলী, মৌডুবি ইউনিয়নের মাঝের দেওর গ্রামের জাহিদুল বাইলাবুনিয়ার আবদুর রহমান, মনিপাড়া গ্রামের ইব্রাহিম শিকদার, আজাহার হাওলাদার, ১১ ডিক্রি গ্রামের সফেজ মাঝি, ছোট বাইশদিয়ার কোড়ালিয়ার সবুজ, লিমন, চরমোন্তাজের সফিক, স্লুইস গেটের আয়েশা, মরিয়ম এরকম ৫ হাজার জেলে পরিবার যারা সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত।
যারা গত ৫ বছরে সরকারি দপ্তরে সাহায্যের জন্য আবেদন নিবেদন করে কোন সহায়তা পাননি। আবার জেলে না হয়েও ১ হাজার টাকা উৎকোচ দিয়ে সরকারি সহায়তা পাচ্ছেন যুগীরহাওলা গ্রামের আইয়ুব আলী, একই পরিবারের পান্নু পেয়াদা, ফজলু, বজলু, সজল, লিমন তালুকদার, রফিক তালুকদার, ছালাউদ্দীন গাজী, সাগর গাজী, সেরাজুল সরদার, কালাম, নাসির, আমলীবাড়িয়ার নেতাবাজারের কাইয়ুম, নাসির রসুল বাড়িয়ার আতাহার তালুকদার, ইমাম ফরাজী আবু তাহের, বেল্লাল হোসেন, গংগী পাড়ার রহমান, হানিফ মৃধা, ফারুক কাজি, ফিরোজ শিকদার, মৌডুবির গিয়াস উদ্দীন, মাঝের দেওর গ্রামের শিপন, আব্বাস, ১১ নং ডিক্রির ফরিদ সহ এরকম কয়েকহাজার জেলে।
উপজেলার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ ও জনপ্রতিনিদের সাথে আলোচনা করে জানাগেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান মামুন উপজেলা মৎস্য অফিসের এক শ্রেনীর অসাধু কর্মকর্তা, কর্মচারী ও আওয়ামী লীগের কিছু নেতাদের দিয়ে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রতিটি জেলে কার্ডের নামের বিপরীতে ১ হাজার করে টাকা নিয়ে সমগ্র উপজেলায় কমপক্ষে ৪-৫ হাজার অজেলেকে জেলে কার্ড পাইয়ে দিয়ে ৩-৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে কিন্তু বঞ্চিত করা হয়েছে প্রকৃত জেলেদের।
যুগীর হাওলা গ্রামের বাসিন্দা ফোরকান হাওলাদার, মনির হোসেন বলেন আমরা এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে অনেকবার প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমরা ঝড় বৃস্টি উপেক্ষা করে অথৈ সাগরে মাছ ধরি, এদেশের অধিকাংশ মানুষের মাছের চাহিদা পুরন করি। বছরে দুইবার ইলিশ শিকারে অবরোধ এবং বৈরী আবহাওয়ার কারনে মাছ ধরা বন্ধ থাকে তখন বাবা মা স্ত্রী সন্তান নিয়ে আমাদের অনাহারে থাকতে হয়। সরকার আমাদের জন্য সহায়তা দিলেই তা আমরা পাচ্ছিনা, মামুন চেয়ারম্যান ও মেম্ববারেরা আমাদের নাম মাস্টার রোলে না দেয়ার কারনে আমরা সহায়তা পাইনা অথচ অনেকে জেলে না হয়েও টাকার বিনিময়ে সরকারি সহায়তা পাচ্ছেন। এসব অভিযোগের ব্যাপারে রাঙ্গাবালি সদর ইউপি চেয়ারম্যানে সাইদুজ্জামান মামুনের সাথে যোগাযোগ চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাতোয়ারা লিপি বলেন আমার বাড়ি মৌডুবিতে আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরে উপজেলার মাসিক সভায় এসব অনিয়মের কথা কয়েকবার উথ্থাপন করেছি কিন্তু কোন সুরাহা করতে পারিনি। উপজেলা চেয়ারম্যান ডাঃ জহির উদ্দীন আহমেদ জানান জেলেদের সরকারি সহায়তা প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি হয়েছে, একটি অসাধু চক্র প্রকৃত জেলেদের বাদ দিয়ে অজেলেদের নামে কার্ড বরাদ্দ দিয়ে তাদের নামেই সরকারি সহায়তা বরাদ্দ করিয়েছে। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর এসব অভিযোগের সত্যতা পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
এব্যাপারে রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা হুমায়ুন কবীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন জেলেদের সরকারি সহায়তা প্রকল্পের তালিকা ও চাহিদা তৈরী করে উপজেলা মৎস্য অফিস তারা আমাদের কাছে শুধু চাহিদা প্রেরন করে আমরা তাদের চাহিদা অনুযায়ী সরকারি সহায়তায় বরাদ্দকৃত অর্থ বা খাদ্য তাদের অনুকুলে বরাদ্দ দেই।
পটুয়াখালি জেলা প্রশাসক মো মতিউল ইসলাম চৌধুরীর কাছে এব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন এ তালিকা করা হয়েছে ৫-৬ বছর আগে তারপর আর তালিকা হালনাগাদ করা হয়নি তারপরও যদি তদন্ত দূর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন পটুয়াখালী জেলার কোন মানুষ অনাহারে থাকবে না। রাঙ্গাবালীর ব্যাপারে আমাদের আলাদা দৃষ্টি রয়েছে সেখানকার মানুষের জন্য সকল ধরনের সহায়তা দেয়া হবে।