বিশ্বকাপের পর শ্রীলঙ্কা সিরিজে খেলেননি সাকিব আল হাসান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই এক টেস্টের সিরিজ দিয়েই ফিরলেন ২২ গজে। কিন্তু ফেরাটা তার সুখকর হতে দিলেন না আফগান স্পিনার রশিদ খান। তার ঘূর্ণিতে কুপোকাত হয়ে গেলেন সাকিব। শুধু তাই নয়, রশিদের ঘূর্ণিতে কুপোকাত অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীমও।
রশিদ খান যে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য একটা আতঙ্ক বয়ে নিয়ে আসবেন, সেটা আগে থেকেই ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু সেটা যে এতটা, তা কি কখনো কল্পনায়ও ছিল। রশিদ খানের ঘূর্ণিতে এখন মহা ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে ৮৮ রান যোগ না করতেই ৮৮ রানে ৫ উইকেট শেষ বাংলাদেশের।
এ রিপোর্ট লেখার সময় বাংলাদেশের রান ৩৩ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৮৮। ২৭ রান নিয়ে ব্যাট করছেন মুমিনুল হক। মুশফিক আউট হওয়ার পরই দ্বিতীয় সেশন শেষ হলো দ্বিতীয় দিনের।
রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় সাদমান ইসলামের। আফগান বোলারদের এ সময় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সামনে মনে হচ্ছিল এক একটি জয়। শুধু ব্যাট নয়, পুরো শরীর দিয়ে বাঁচাতে হচ্ছে আফগান বোলারদের কাছ থেকে ছুটে আসা বলগুলো। এর মধ্যে এলবিডব্লিউর চান্সও থেকে যায়।
সেই এলবিডব্লিউর শিকারই হলেন সৌম্য সরকার। সাদমানের বিদায়ের পর জুটি বেধে বিপর্যয় কাটানোর চেষ্টা করেছিলেন সৌম্য আর লিটন কুমার দাস। ওয়ানডাউনে লিটনকে মাঠে নামানো ছিল হয়তো একটি বিশেষ পরিকল্পনার অংশ।
৩৮ রানের জুটি গড়ে এ দু’জন অনেকটাই সাবলিল হয়ে ওঠার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু ভুলটা করে বসলেন সৌম্য। মোহাম্মদ নবির সোজা লেন্থ বলে এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে গেলেন সৌম্য। ৬৬ বলে ১৭ রান করে বিদায় তিনি।
সৌম্য বিদায় নেয়ার পর মুমিনুল হকের সঙ্গে জুটি বাধার চেষ্টা করছিলেন লিটন দাস। কিন্তু দলীয় ৫৪ রানের মাথায় রশিদ খানের ঘূর্ণি বলে পুল করতে চেয়েছিলেন লিটন। কিন্তু বল উঠলো না এবং সোজা গিয়ে আঘাত হানলো স্ট্যাম্পে। বোল্ড হয়ে গেলেন তিনি ব্যক্তিগত ৩৩ রানে।
মূলতঃ একজন পেসারও না রেখে পুরোপুরি স্পিনার দিয়ে বোলিং অ্যাটাক সাজিয়েছিল বাংলাদেশ। বিপরীতে আফগানিস্তান দলে নেয়া হয়েছিল একজন পেসার। সেই এক পেসারে শুরুতেই কোনঠাসা বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ করার আগেই ওপেনার সাদমান ইসলামকে ফিরিয়ে দিলেন আফগান পেসার ইয়ামিন আহমদজাই।
প্রথম ইনিংসে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৩৪২ রানের বিশাল স্কোর গড়ে তোলে আফগানরা। সেঞ্চুরি করেছিলেন রহমত শাহ। জবাব দিতে নেমে শুরুতেই যেভাবে উইকেট হারালো বাংলাদেশ, তাতে সাকিব আল হাসানের দল কতদুর যেতে পারবে, সেটাই এখন চিন্তার বিষয়।
টস জিতে প্রথম দিন ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের বোলারদের ভালোই ভুগিয়েছেন আফগান ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে রহমত শাহ। আফগানিস্তানের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি করলেন তিনি। তার সেঞ্চুরি এবং ৮৮ রানে থাকা আসগর আফগানের ব্যাটে ভর করে প্রথম দিন শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেট হারিয়ে ২৭১ রান।
দ্বিতীয় দিন ব্যাট করতে নেমে দ্রুত বাকি ৫ উইকেট হারালেও ৩৪২ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় আফগানরা। ১০২ রান করে আউট হন রহমত শাহ। ৯২ রান করেন আসগর আফগান এবং শেষ মুহূর্তে হাফ সেঞ্চুরি করেন রশিদ খানও।
তাইজুল ইসলাম ৪১ ওভার বল করে নেন ৪ উইকেট। ২টি করে উইকেট নিলেন নাঈম হাসান এবং সাকিব আল হাসান। ১টি করে নেন মেহেদী হাসান মিরাজ এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।