আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:
আমতলী-তালতলী উপজেলার দুই কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ সুপার সাইক্লোণ আম্ফানের ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রবল বেগে আম্ফান উপকুলে আঘাত হানলে পায়রা নদী সংলগ্ন এ বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে ছয়টি ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে বাধ এলাকায় বসবাসরত অন্তত ৩০ হাজার মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।
পায়রা নদী সংলগ্ন বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের এ মানুষ গুলোকে রক্ষায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া দাবী জনিয়েছেন এলাকাবাসী।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানাগেছে, ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে ৫-১০ ফুট জলোচ্ছাস হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। জলোচ্ছাসে আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বালিয়াতলী-পশুরবুনিয়া ও ডাঙ্গার খাল এলাকায় ৫’শ মিটার, চাওড়া ইউনিয়নের পশ্চিম ঘটখালী এলাকায় ২’শ মিটার, গুলিশাখালী ইউনিয়নের আঙ্গুলকাটা এলাকায় ৩’শ মিটার, হলদিয়া ইউনিয়নের পুর্ব চিলা এলাকায় ২’শ মিটার, আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের সোনাখালী এলাকায় ২’শ মিটার এবং তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেতুঁলবাড়িয়া এলাকায় ৫’শ মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ অধিক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ২০০৭ সালে ঘুর্ণিঝড় সিডরে ওই সকল এলাকার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
গত ১৩ বছরেও এ বাঁধগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড। আম্ফানের প্রভাবে ঝুকিপূর্ণ বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে পানিতে এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। এতে ঝুঁকি নিয়ে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ আতঙ্কে বাঁধ এলাকায় বসবাস করছে। দ্রুত ঝুকিপূর্ণ বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ এলাকার মানুষকে রক্ষায় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার ঝুকিপূর্ণ বাঁধ এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়ার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান আমতলীর ইউএনও মনিরা পারভীন।
আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বালিয়াতলী গ্রামের মোঃ সাইদুল আকন বলেন, স্বাভাবিক জোয়ারেই ঝুকিপূর্ণ বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ উচিয়ে পানি ভিতরে প্রবেশ করে। এরপর যদি ঘুর্ণিঝড়েরর প্রভাবে পানি বদ্ধি পায় তাহলে এই এলাকা তালিয়ে গিয়ে কয়েক হাজার মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।
দ্রুত বাঁধ এলাকার মানুষকে রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানাই।
তালতলীর তেতুলবাড়িয়া গ্রামের জসিম উদ্দিন বলেন, ঝুকিপূর্ণ বাঁধ এলাকায় বসবাস করছি। কি হয় আল্লায়ই জানে। বন্যায় বেশী পানি হলে নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে যাবে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী আজিজুল রহমান সুজন বলেন, বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাইন বিল্লাহ ও নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার আলমের নির্দেশক্রমে ঘুর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবেলায় এলাকায় কাজ করছি। তিনি আরো বলেন, ঘুর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত হানলে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কায়সার আলম বলেন, ঘুর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবেলায় অধিক ঝুকিপূর্ণ এলাকায় বালুর বস্তা রাখা হয়েছে। জরুরী প্রয়োজনে ঝুকিপূর্ণ এলাকা মেরামত করা হবে। তিনি আরো বলেন, কিছু কিছু ঝুকিপূর্ণ এলাকায় কাজ চলছে।