প্রবল শক্তি নিয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ আছড়ে পড়েছে বাংলাদেশের উপকূলে। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ভোলা, বরগুনা, রাজশাহী ও যশোরে ১০ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
ঘূর্ণিঝড় আম্পান ১৫১ কিলোমিটার বেগে সাতক্ষীরা অতিক্রম করে। ১৬৭ কিলোমিটারে আঘাত হানে যশোরে। যার প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক ঘর-বাড়ি ও গাছপালা ভেঙে পড়েছে।
জানা যায়, পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে গলাচিপা উপজেলায় রাসেদ (৬) নামে এক শিশু ও কলাপাড়ায় শাহ আলম নামে সিপিপি’র এক কর্মীর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর বিষয়টি কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হাসনাত নিশ্চিত করেছেন।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে দেয়াল চাপা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়।
ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার আহমেদ জানান, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় বয়স্ক ভাতা নেয়ার জন্য যাচ্ছিলেন ছিদ্দিক ফকির। এ সময় দক্ষিণ আইচা এলাকায় তার ওপর গাছের ডাল ভেঙে পড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
এছাড়া ভোলার বোরহানউদ্দিনের হাসান ইউনিয়নের রফিকুল ইসলাম (৩৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ভোলার বোরহানউদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ এনামুল হক জানান, লক্ষ্মীপুর থেকে ট্রলারে করে ভোলায় আসার পথে আলতু মিয়ার ঘাট এলাকায় মেঘনা নদীতে ডুবে রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামাল সাতক্ষীরা শহরের সঙ্গীতা মোড়ে আম কুড়াতে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়ে এক নারী মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
যশোর চৌগাছা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে গাছ পড়ে মা ও মেয়ে নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন, চৌগাছার চাঁদপুর গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলীর স্ত্রী খ্যান্ত বেগম (৪৫) ও তার কিশোরী মেয়ে রাবেয়া খাতুন (১৩)। বিষয়টি চৌগাছা থানার ওসি নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া বরগুনা সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার জানান, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে সদর উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্র যাওয়ার পথে এক ব্যবসায়ী অসুস্থ হয়ে মারা যান।
রাজশাহীর মোহনপুরে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে মনোয়ারা বেগম (৪২) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার কেশরহাট পৌরসভার হরিদাগাছি গ্রামের বারুইপাড়ার ইসহাক আলীর স্ত্রী।
বুধবার (২১ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাড়ির পাশে আম গাছের নিচে থেকে তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে পরিবারের সদস্যরা।
নিহতের স্বামী ইসহাক আলীর বরাত দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানওয়ার হোসেন জানান, রাতে ছোট মেয়েকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন মনোয়ারা বেগম। ঝড় শুরু হলে কিছুক্ষণ পর পরিবারের সদস্যদের অগোচরে আম কুড়াতে যান। মেয়ে ঘুম থেকে জেগে মাকে না পেয়ে কান্না শুরু করলে অন্যরা বিষয়টি জানতে পারেন।