আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার অধিকাংশ মানুষ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না। মাস্ক ব্যবহার করেন না শতকরা ৮০% লোক। এ কারনে বেড়েই চলছে মহামারী করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব। গত দুই মাসে এ উপজেলার ২১ জন মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা থাকলেও সাধারণ মানুষ তা মানছেন না। এ বিষয়ে প্রশাসন দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা না নিলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান সচেতন সমাজ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানাগেছে, গত ৬৭ দিনে আমতলী হাসপাতাল থেকে ৩’শ ৫৫ জন মানুষের নমুনা সংগ্রহ করে ২১ জনের নমুনা করোনাভাইরাস পজেটিভ এসেছে। ওই ২১ জনের মধ্যে ১ জন মারা যায়। ১৫ জন সুস্থ্য হয়েছেন। এখনও অসুস্থ্য হয়ে ৫ জন হোম আইসোলেন চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত ৯ এপ্রিল করোনায় একজনের মৃত্যুর এক সপ্তাহ পরে নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা এক কাপড় ব্যবসায়ী ও তার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়। এরপর একে একে বাড়তে থাকে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ জনে। সারাদেশে করোনা আক্রান্ত ও নিহতের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও এ উপজেলার সাধারণ মানুষ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না। মুখে মাস্ক ব্যবহার করছেন না শতকরা ৮০% মানুষ। দেশে সাধারণ ছুটির পরে মানুষ উৎফুল্ল হয়ে ঘরের বাহিরে বের হয়ে আসছে। প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন হাট- বাজারে মানুষের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ করা যায়। বিভিন্ন চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে দেখা যায় অনেক লোককে। এতে করোনা সংক্রমন ঝুঁকি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে উপজেলায় ৭ জন করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আমতলী উপজেলা করোনাভাইরাসের অধিক ঝুঁকিতে থাকা সত্ত্বেও মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না ও অধিকাংশ মানুষ মুখে মাস্ক ব্যবহার করছে না। মাস্ক ছাড়াই সড়কে নেমে চলাফেরা করছে।
স্থানীয় স্বাস্থ্য সচেতন ব্যাক্তিরা উপজেলা প্রশাসনের কাছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও মাস্ক ব্যবহারের উপর করারোপের জোর দাবী জানিয়েছেন।
সরেজমিনে বুধবার (১৭ জুন) পৌরশহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখাগেছে, কাজ ছাড়া মানুষ অহেতুক রাস্তায় ঘোরাফেরা করছে, চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছে। এদের অধিকাংশ সামাজিক দূরত্ব স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। ৮০% মানুষ মুখে মাস্ক ব্যবহার না করে রাস্তায় চলাচল করছেন।
উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের চুনাখালী বাজারের হারুন অর রশিদ বলেন, কোন কারন ছাড়াই মানুষ অহেতুক হাটে- বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং বিভিন্ন চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন। ঘরের বাহিরে নামা অধিকাংশ মানুষ স্বাস্থ্যবিধিতো মানছেনই না আর মুখেও মাস্ক ব্যবহার করছেন না।
গাজীপুর বন্দরের ব্যবসায়ী মোঃ প্রিন্স মৃধা বলেন, অহেতুক যারা ঘরের বাহিরে এসে বিভিন্ন চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন, স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না ও মুখে মাস্ক ব্যবহার করছেন না দ্রুত তাদের বিরদ্ধে প্রশাসনের কাছে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাচ্ছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলা ও মুখে মাস্ক ব্যবহার না করার কারনে দিন দিন করোনাভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত দুই মাসে এ উপজেলায় ৩’শ ৫৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ২১ জনের করোনাভাইরাস নমুনা পজেটিভ এসেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন মুঠোফোনে বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে ও মাস্ক ব্যবহারে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরপরেও যারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে না ও মুখে মাস্ক ব্যবহার করবেনা তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।