পর্যটন নগরী সাগরকন্যা কুয়াকাটায় দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস পর করোনাভাইরাস চলাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবাসিক হোটেল-মোটেলসহ পর্যটননির্ভর ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দিয়েছেন পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেয়া হয়।
এর আগে এ মাসের ৫ জুন পর্যটকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের আয়োজন ও হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় অভিজাত হোটেল গ্রেভার ইন-এ তিনদিনের প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক।
সূত্র জানায়, বিশ্ব মহামারি করোনাভাইরাসের শুরুতেই ১৭ মার্চ কুয়াকাটার পর্যটন শিল্পকে লিখিতভাবে বন্ধ করেন জেলা প্রশাসক। এরপরই সাগরকন্যা কুয়াকাটায় দীর্ঘ তিন মাস ১৩ দিন বন্ধ থাকে পযর্টন শিল্প। ফলে কয়েকশ কোটি টাকা লোকসানের মুখে এখানকার ট্যুরিজম ব্যবসায়ীরা।
গত মাসে সারাদেশে গণপরিবহন ছাড়লেও বন্ধ রয়েছে কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, পার্ক, ওয়াটার বাস, ট্যুরিস্ট বোট, আচারের দোকান, ছাতাবেঞ্চ, শুঁটকির দোকান, কাঁকরার ফ্রাই দোকান, গুরুত্বপূর্ণ শপিংমল, রাখাইন মহিলা মার্কেটসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এতে লোকসান হয় কয়েকশ কোটি টাকা। এ ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বেকার হচ্ছে কয়েক হাজার শ্রমিক। অক্লান্ত পরিশ্রমের পরে কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের একটি প্রতিনিধি দল পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করলে আগামী ১ জুলাই পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবাসিক হোটেলসহ সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দেয়া হয়।
এ আশার বাণী কুয়াকাটায় পৌঁছলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে উৎফুল্ল দেখা যায়। কুয়াকাটা সি ট্যুর অ্যান্ড ট্রালেস পরিচালক জনি আলমগীর বলেন, এ মহামারিতে আমাদের ব্যবসা বন্ধ থাকায় অনেক ক্ষতির মুখে পড়েছি আমরা।
সৈকত হোটেলের মালিক শেখ জিয়াউর রহমান বলেন, আমাদের হোটেলবয়দের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করবো পর্যটকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিতে।
অভিজাত হোটেল গ্রেভারইন ম্যানেজার সাজ্জাত মিতুল বলেন, এ মহামারিতে দেশের সব অফিসে তো কাজ চলছে আমরা কেন পারবো না; আমরাও পারবো পর্যটকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিতে।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এম.এ মোতালেব শরিফ বলেন, আমাদের সংগঠনের কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছি এবং আমরা বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছি। তিনি অনুমতি দিয়েছেন আগামী ১ জুলাই হোটেল খোলার জন্য।
এ ব্যাপারে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী +বলেন, সরকারের দেয়া শেষ প্রজ্ঞাপনের শর্ত মেনে আবাসিক হোটেল খোলা রাখতে পারবে। কুয়াকাটার হোটেল-মোটেল এতদিন বন্ধ রাখায় তাদের ধন্যবাদ জানাই। এর মাঝে তারা স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন। আগামী ১ জুলাই কুয়াকাটা হোটেল-মোটেলসহ সবকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। আশা করি সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে।