বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে নয় দিন ঘুরেও নমুনা দিতে না পারা স্থানীয় সাংবাদিক এ এস এম জসিমের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। জেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক সালামাতুল্লাহ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এরআগে অসুস্থ শরীর নিয়ে বারবার হাসপাতালের বারান্দায় ঘুরে ঘুরে কোনো সমাধান না পাওয়ার বিষয়টি দৈনিক আমাদের সময়ে প্রকাশের পর গত শনিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার নমুনা সংগ্রহ করে।
সাংবাদিক জসিম দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার পাথরঘাটা সংবাদদাতা ও স্থানীয় অনলাইন পোর্টাল পাথরঘাটা নিউজের বার্তা সম্পাদক। জসিম বলেন, ‘গত মাসের ২৫ তারিখ থেকে আজ-কাল বলে ঘুরিয়ে, গতকাল বৃহস্পতিবার নির্ধারিত সময়ে আমাকে আবার যেতে বলে। বৃহস্পতিবার সকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে জানতে পারি পরিবহন সংকটের কারণে দুদিন ধরে করোনা পরীক্ষার কার্যক্রম বন্ধ।
পরে অনেক অনুরোধ করে নমুনা সংগ্রহ করে নিজ উদ্যোগে বরগুনা জেলা হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার চুক্তি করি। রাজি হয়েও একপর্যায়ে তাতে অপারগতা প্রকাশ করেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা আবুল ফাত্তাহ। পরে শুক্রবারও তিনি আমাকে যেতে বলেন, গিয়েও নমুনা দিতে পারিনি। তাই ব্যর্থ হয়ে হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছি।’
এ নিয়ে বৃহস্পতি ও শুক্রবার দৈনিক আমাদের সময়ে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোস্তফা গোলাম চৌধুরীর মাধ্যমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জসিমকে ডেকে শনিবার সকালে নমুনা সংগ্রহ করে বরগুনা পাঠায়। সেখান থেকে দক্ষিণ অঞ্চলের একমাত্র পরীক্ষাগার বরিশাল পাঠানো হয়।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সালামাতুল্লাহ খান মুঠোফোনে বলেন ‘কিছুক্ষণ আগে সাংবাদিক জসিমের করোনা পজিটিভ হওয়ার রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে।’
এ বিষয়ে সাংবাদিক জসিম বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে হাসপাতাল থেকে দায়িত্বরত এক চিকিৎসক ফোন করে ২১ দিন ঘরে অবস্থান করতে বলে। কিন্তু আমি যখন উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় ৯/১০ দিন ঘুরলাম তখন তারা বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি।’
পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে সভাপতি মোস্তফা গোলাম চৌধুরী বলেন, ‘করোনার উপসর্গ নিয়ে ক্লান্ত শরীরে হাসপাতালের বারান্দায় ঘুরে ঘুরে পরীক্ষা করাতে না পেরে জসিম হতাশায় ভেঙে পড়লে বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকরা গুরুত্ব সহকারে দেখে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্ব দেয়। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।’