বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

কুয়াকাটা সৈকতে ভাঙ্গনের তীব্রতা বাড়ছে

কুয়াকাটা সৈকতে ভাঙ্গনের তীব্রতা বাড়ছে

ঘুর্ণিঝড় আমফানের তান্ডবে এক দফা বিধ্বস্ত হওয়া কুয়াকাটা সৈকতে এখন চলছে সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের তীব্র ভাঙ্গন। অমাবস্যা-পুর্ণিমার জোতে অস্বাভাবিক জোয়ারের তান্ডবে সৈকতের শূন্য পয়েন্টের দুইদিকের অন্তত ১০ ফুট প্রস্থ ভেসে গেছে।

 

বালুর স্তর গিলে খেয়েছে সাগর। এখন দীর্ঘ সৈকতে জোয়ারের সময় থাকেনা ওয়াকিং জোন। গেল বছর ভাঙ্গন রোধে জিও টিউব দিয়ে জরুরি প্রতিরোধের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল।

এবছর এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ২০০৪ সাল থেকে বহুবার সমীক্ষা চালিয়ে সৈকত রক্ষায় প্রতিরক্ষা প্রকল্প হাতে নেয়া হয় কমপক্ষে তিন দফা। কিন্তু তা আর শেষ পর্যায় গিয়ে আলোর মুখ দেখেনি। এদিকে ভাঙ্গনের তীব্রতায় ক্ষুদে দোকানি, বীচ এলাকার ব্যবসায়ীসহ পর্যটকরা উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৪৮ নম্বর পোল্ডারের ১৭ দশমিক ২৫০ তম কিলোমিটার থেকে ৩৭ দশমিক ২৫০ তম কিমি পর্যন্ত বেড়িবাঁধের বাইরের দীর্ঘ ২০ কিলোমিটার মূলত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এলাকা নির্ধারণ করা রয়েছে। এর গঙ্গামিত লেকের ২৪ দশমিক ২৫০ তম কিমি থেকে আন্ধারমানিক নদী মোহনার ৩৪ দশমিক ৭৫০ তম কিমি পর্যন্ত সাড়ে দশ কিলোমিটার সৈকত সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়।

যেখানে মূলত পর্যটকরা বিচরণ করেন। এই সাড়ে দশ কিলোমিটারের মধ্যে ২৭ দশমিক ৪০০ কিলোমিটার থেকে ৩২ দশমিক ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পাঁচ দশমিক এক কিলোমিটার সাগরের তীব্র ভাঙ্গন এলাকা। তীব্র ভাঙ্গনপ্রবণ এলাকার শুন্যপয়েন্টের পশ্চিমে পাচ শ’ মিটার এবং পুবে দুই কিমি মোট আড়াই কিমি গ্রীণ সী ওয়াল ও জিও টিউবের ব্যবহার মাধ্যমে ২০১৮ সালে সৈকত এলাকা রক্ষার সিদ্ধান্ত হলেও পরে তা বাতিল হয়ে যায়।

তখন ২১২ কেটি ৮২ লাখ টাকার ওই প্রকল্প ব্যয়-বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছিল। ফলে অরক্ষিত হয়ে পরে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। ২০১৫ সালে এই প্রকল্প প্রণয়নের কাজ শুরু হলেও কয়েক দফা সমীক্ষা শেষে শেষ পর্যায় বাতিল হয়ে যায়।

বর্তমানে সৈকতে ঝুকিপুর্ণ পাঁচ কিলোমিটার অংশের মধ্যে আড়াই কিলোমিটার খুবই ঝুঁকিপুর্ণ। যা রক্ষায় গেল বছর জরুরি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে প্রায় দুই কিমি অংশে। তখন জিও টেক্সটাইল ব্যাগ দেয়ার পাশাপাশি জিও টিউব দেয়া হয়। কিন্তু এখন টিউব ও ব্যাগের বেহাল দশা। ঢেউয়ের তীব্রতায় লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। বেলাভূমে চলছে তীব্র ভাঙ্গন। ঢেউয়ের ঝাপটা বাধাগ্রস্ত হওয়ার কিছুই নেই।

শুন্যপয়েন্টর পশ্চিম দিকে জেলে পল্লী এলাকা ভেসে যাচ্ছে প্রত্যেকটি জোয়ারে। সৈকতের পরিধি খাটো হয়ে যাচ্ছে। অন্তত অস্থায়ী ৫০টি দোকান জোয়ারের ঝাপটায় ক্ষতির কবলে পড়েছে। আচার স্টেশনারি দোকানি মো. শামীম জানান, আম্ফান থেকে শুরু কওে পুর্ণিমা অমাবস্যার জোতে অস্বাভাবিক জোয়ারে তাঁদের ২০/২৫ জনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালীউজ্জামান জানান, কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্টের পূর্ব দিকের জিও টিউব এখনও কাজে লাগছে। তবে পশ্চিম দিকে কিছুটা প্রটেকশন দেয়া প্রয়োজন। তিনি আরও জানান, কুয়াকাটা সৈকত রক্ষায় স্থায়ী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য পাউবোর পক্ষ থেকে সম্ভাব্যতা যাচাই করে সমীক্ষা চালানো হয়েছে।

কলাপাড়ার ইএনও ও বীচ ম্যাজেমেন্ট কমিটির সদস্য আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, কুয়াকাটা সৈকতের ভাঙ্গরোধে জরুরি উদ্যোগ নেয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মহিব্বুর রহমান জানান, কুয়াকাটা সৈকত রক্ষায় জরুরি এবং স্থায়ী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সকল উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech