এম.এ হান্নান:
পটুয়াখালীর বাউফলে বায়োফ্লক পদ্ধিতে মাছ চাষ করে অমিত সম্ভাবনাকে বাস্তবে রুপ দিয়ে আশার আলো জাগিয়েছে উপজেলার বগা ইউনিয়নের চাঁদপাল গ্রামের মৎস্য চাষী মো. জাহিদুল ইসলাম শফিক।
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার পিছনে আগ্রহ, কারিগরি জ্ঞান, খামারের বর্তমান অবস্থা এবং সফলতার কথা জানান সফল মৎস্য চাষী জাহিদুল ইসলাম শফিক।
প্রতিবেশী দেশ ভারতে ঘুরতে গিয়ে বায়োফ্লক পদ্ধিতে মাছ চাষ দেখে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য উদ্ভুদ্ধ হন তিনি। এরপর দেশে এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের কারিগরি জ্ঞান অর্জন করেন। এরপর ২০১৮ সালে ঢাকায় পরীক্ষামূলকভাবে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করেন। সফলতা পাওয়ায় ২০১৯ সালে বাউফল উপজেলার বগা ইউনিয়নের চাঁদপাল গ্রামে নিজ পৈত্রিক বাড়িতে মাত্র ৪শতক জমিতে গড়ে তুলেছেন খামার বাড়ী বায়োফ্লক ফিশ হ্যাচারী।
বর্তমানে তাঁর হ্যাচারীতে ৫০হাজার লিটার ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি চৌবাচ্চা ও ১০হাজার লিটার ধারন ক্ষমতাসম্পন্ন আরো তিনটি চৌবাচ্চায় মাছ চাষ করছেন তিনি। নিয়মিত অক্সিজেন ও বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য রয়েছে নিজস্ব ব্যবস্থা। সব মিলিয়ে এই হ্যাচারীটি তৈরী করতে তার ব্যায় হয়েছে মাত্র ৫লাখ টাকা। মাত্র চার শতক জমিতে তৈরী এই মৎস্য খামার থেকে শফিক এখন প্রতিমাসে আয় করছেন প্রায় ২লাখ টাকা আয়। লাভের মুখ দেখায় আরো ৩৫শতক জমি এই মৎস্য হ্যাচারীর আওতায় আনার কাজ শুরু করেছেন তিনি। প্রথম দিকে স্থানীয়রা শফিকের এই কাজ কে পাগলামি বলে তাচ্ছিল্য করলেও বর্তমানে শফিকের এই খামারটি দেখতে আসছেন দূর দুরান্তের মানুষ। শফিকের বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ আশা জাগাচ্ছে স্থানীয় বেকার যুবকদের মধ্যে। মৎস্য চাষী শফিক স্বপ্ন দেখেন এক সময়ে এই খামার থেকে উৎপাদিত মাছ বিদেশে রপ্তানি করবেন তিনি।
বায়োফ্লক পদ্ধিতে একই জমিতে পুকুরের ঘনত্বের থেকে ১০গুন বেশি মাছ উৎপাদন করা সম্ভব। অত্যন্ত কম পরিশ্রমে অধিক লাভ হয় এ পদ্ধতিতে। বৈজ্ঞানিক এই পদ্ধতিতে চাষ করা মাছ খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু বলেও জানান তিনি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন বলেন, বায়োফ্লকে মাছ চাষ আমাদের দেশে নতুন। শুনেছি বাউফলে কয়েকজন এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করেছেন। দু:খজনক হলেও সত্য, কেউই আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। তাদের সকল ধরনের সহযোগীতা দিতে আমরা প্রস্তুত।