বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

‘পলাশ কেন বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছে, বলতে পারব না’

‘পলাশ কেন বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছে, বলতে পারব না’

চট্টগ্রামে বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় নিহত পলাশ আহমেদের সাবেক স্ত্রী অভিনেত্রী শামসুন নাহার সিমলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম নগরের দামপাড়া কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কার্যালয়ে আসেন তিনি। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক রাজেস বড়ুয়া।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের অভিনেত্রী শামসুন নাহার সিমলা বলেন, ‘তদন্তকারী কর্মকর্তা আমার কাছে বিভিন্ন বিষয় জানতে চেয়েছেন। আমি আমার কাছে থাকা সব তথ্য জানিয়েছি।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পলাশ কেন বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছে, তা আমি বলতে পারব না। আমাদের ডিভোর্স হয়ে গিয়েছিল। বিয়ের পর মনে হয়েছিল পলাশ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তাই তাকে ডিভোর্স দিয়েছি।’

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট সূত্র জানায়, সিমলা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানান, ২০১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ‘নাইওর’ ছবির পরিচালক রাশিদ পলাশের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে পলাশ আহমেদের সঙ্গে সিমলার পরিচয় হয়। তখন পলাশ সিমলাকে জানিয়েছিলেন, তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিট্রিশ। লন্ডনে তাদের পারিবারিক ব্যবসা রয়েছে। নিজেও ব্যবসা করেন। সিনেমার প্রতি তার আগ্রহ আছে। তার বাবাও বড় ব্যবসায়ী। নারায়ণগঞ্জে তাদের বিশাল বাড়ি রয়েছে। বিয়ের পর তিনি স্ত্রীকে নিয়ে লন্ডনে চলে যাবেন। এসব শুনে সিমলা নিজেই পলাশকে বিয়ের বিষয়ে আগ্রহী হয়ে প্রস্তাব দেন। ২০১৮ সালের ৬ মার্চ পলাশ ও সিমলা বিয়ে করেন। বিয়ের পর সিমলাকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাগজপত্রও তৈরি করিয়েছিলেন পলাশ। একপর্যায়ে সিমলা জানতে পারেন, সবই ভুয়া। তিনি প্রতারিত হয়েছেন। পলাশের আচার-আচরণও স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল না। পলাশকে মেন্টালি ডিস্টার্বড মনে হয়েছে তার। এ জন্য একই বছরের ৫ নভেম্বর পলাশকে ডিভোর্স দেন তিনি। ডিভোর্সের বিষয়টি জানতে পেরে একবার ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যারও অভিনয় করেন পলাশ। বারবার সিমলাকে এসএমএস পাঠান। কিন্তু কখনো তিনি তার উত্তর দেননি। এতে তার আচরণ আরও উগ্র হয়ে যায়। সিমলার সঙ্গে সংসার হবে না জেনে মানসিক বিপর্যস্ততা থেকে বিমান ছিনতাই চেষ্টা করেছেন বলে মনে করছেন সিমলা।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ বিমানের দুবাইগামী ফ্লাইট বিজি-১৪৭ ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই এক যুবক অস্ত্র দেখিয়ে জিম্মি করেন ক্রুদের। ওই অবস্থায় বিমানের পাইলট চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানটি অবতরণ করান। যাত্রী ও ক্রুদের নামিয়ে আনার পর কমান্ডো অভিযানে মারা পড়েন ওই যুবক। পরে জানা যায়, ওই যুবক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের দুধঘাটা এলাকার পিয়ার জাহান সরদারের ছেলে পলাশ আহমেদ। ঘটনার দিন অভিযান পরিচালনাকারীরা জানিয়েছিলেন, পলাশ ‘স্ত্রীর বিষয়ে’ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। পরদিন শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রযুক্তি সহকারী দেবব্রত সরকার বাদি হয়ে পতেঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় পলাশ আহমেদ ও অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়। মামলার এজাহারেও বলা হয়, তার কিছু দাবি দাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রীকে শোনানোর জন্য বিমান ক্রুদের জিম্মি করেন পলাশ।

মামলা দায়েরের পর তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে বিমান থেকে উদ্ধার করা পিস্তল ও বিস্ফোরকসদৃশ বস্তুসহ বেশকিছু আলামত জমা দেয় র‌্যাব ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো টিম। পরে পিস্তলটি অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডিতে পাঠানো হয়। গত ১৩ মার্চ সিআইডি পিস্তলের ব্যালাস্টিক পরীক্ষার প্রতিবেদন দেয় কাউন্টার টেরোরিজমের হাতে। এতে বলা হয়, পিস্তলটি ছিল খেলনা।

বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় এ পর্যন্ত শিমলাসহ ৪২ জন সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক রাজেস বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘সিমলা এ মামলার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন সাক্ষী। তিনি গত ২৫ অগাস্ট মুম্বাই থেকে দেশে ফিরেন। এরপর তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তদন্তের অংশ হিসেবে বিভিন্ন বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যগুলো যাচাই বাছাই করা হবে।’

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech