একটি কয়েনের দাম এক লাখ টাকা। এরপরের একটি কয়েনের দাম ৫০ হাজার। এ যেন রূপকথার গল্প।
মতিঝিল ক্লাবপাড়ার ক্যাসিনোর জুয়ার বোর্ডে সর্বোচ্চ ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কয়েনের দাম। থরেথরে সাজানো থাকে জুয়ার বোর্ডের এসব কয়েন।
ক্লাবে প্রবেশের পর ক্যাশ কাউন্টারে টাকা জমা দিয়ে এ কয়েন সংগ্রহ করতে হয়। এছাড়াও রয়েছে ১০ হাজার, পাঁচ হাজার ও সর্বনিম্ন এক হাজার টাকার কয়েন।
সরেজমিনে ক্লাবগুলো ঘুরে ও আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, এখানে প্রতিরাতে জুয়ার বোর্ডে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে জুয়ারিরা জুয়ার নেশায় ছুটে আসেন। বেশির ভাগই হেরে বাড়ি যান। তবে জুয়া পরিচালনাকারীরা সদয় হয়ে বাসায় ফেরার ভাড়া দিয়ে বাড়ি পাঠান।
এর আগে বুধবার বিকেলে রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় ইয়ংমেন্স ক্লাবের নিষিদ্ধ জুয়ার ক্যাসিনোতে অভিযান শুরু করে র্যাব। অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম।
ক্যাসিনোতে জুয়ার ফাঁকে ফাঁকে মদপান চলছিল বলে জানিয়েছে র্যাব। অভিযানের আগ থেকেই ক্লাবটি ঘিরে রাখেন র্যাবের সদস্যরা। তারা দুপুর থেকে সেখানে কাউকে ঢুকতে এবং বের হতে দেননি।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, অভিযানের সময় ভেতরে থাকা এবং ক্যাসিনোতে জুয়া খেলা অবস্থায় ১৪২ জনকে আটক করা হয়েছে। আমাদের কাছে অভিযোগ আছে, এই ক্লাবে আট মাস ধরে অবৈধ আসর বসছিল। এ সময় আমরা দেখি, ক্লাবের নিচতলায় যন্ত্রের মাধ্যমে জুয়া খেলা (ক্যাসিনো) চলছে। এছাড়া জুয়া খেলার ফাঁকে ফাঁকে মদ পান হচ্ছে।
তিনি জানান, যারা এই ক্লাবে এসেছেন তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আটক ব্যক্তিদের মদ পানের লাইসেন্স নেই। এমনকি ইয়াংমেন্স ক্লাবেরও মদ বিক্রির লাইসেন্স নেই। এ সময় জুয়া খেলার ২৪ লাখ টাকাও জব্দ করা হয়।
ওই ক্যাসিনোতে অভিযানের পরই অবৈধভাবে ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে অস্ত্রসহ আটক করে র্যাব। বুধবার রাত ৮টা ২৫ মিনিটে তাকে গুলশানের বাসা থেকে আটক করা হয়।