নিউজ ডেস্ক:
ক্লাবে ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো নিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিএনপিকে দায়ী করে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, এখন ঘরে ঘরে ক্যাসিনো। ১২ বছর ধরে জুয়া, ক্যাসিনো চলছে। সরকার ধরতে পারেনি। এখন যখন ধরা পড়ে গেছে, তখন বলছে বিএনপি সরকারের আমল থেকে এটা চলে আসছে। তাহলে সরকার ১২ বছর কী করছিল? আঙুল চুষছিল?
মঙ্গলবার বিকেলে সিলেট নগরীর রেজিস্টারি মাঠে বিভাগীয় বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য একথা বলেন মির্জা ফখরুল। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য দলের সবাইকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বিচার ব্যবস্থায় ভয়াবহ নৈরাজ্য চলছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার বিচার ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করে তাদের প্রয়োজনে, রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করছে। প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে দলীয়করণ করেছে সরকার। এই সরকার জনগণের সরকার নয়, জনবিরোধী সরকার।
তিনি বলেন, সরকার গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনগণের ওপর বোঝা বাড়াচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। দেশে মেগা প্রকল্পের নামে মেগা লুটপাট চলছে।
খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের সাজা ও মামলা প্রত্যাহার এবং পুনরায় জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীমের সভাপতিত্বে সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বক্তব্য দেন। সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ ও মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী সমাবেশ পরিচালনা করেন।
সরকার দুই বছরেও রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে পারেনি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা প্রথম দিনেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিলাম।
সরকার ভয়ে এই সমাবেশ বন্ধ করতে চেয়েছিল অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কয়েকদিন আগে সিলেটে ছাত্রদলের একটি মিছিলে হাজারো নেতাকর্মীর অংশগ্রহণ দেখেই সরকার ভয় পেয়েছে।
মির্জা ফখরুল সরকারের সমালোচনা করে বলেন, এরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তারা নির্বাচনের আগের দিন রাতে ভোট ডাকাতি করেছে। আওয়ামী লীগের লোকজন তা পারেনি। তারা পুলিশ, বিজিবিসহ রাষ্ট্রযন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে ভোট ডাকাতি করেছে। বন্দুকের নলের ভয় দেখিয়ে ক্ষমতায় বসে আছে এই সরকার।
তিনি বলেন, তারা সুপরিকল্পিতভাবে, সুচিন্তিতভাবে এই দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছে। তারা রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিচ্ছে। সংসদ নাই, একটি গৃহপালিত বিরোধীদল সেখানে বসে আছে।
অন্যান্যের মধ্যে এসময় আরও বক্তব্য দেন- দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মোহাম্মদ শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক দিলদার হোসেন সেলিম ও কলিম উদ্দিন মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মুজিবুর রহমান, শফিউদ্দিন চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন প্রমুখ।
সমাবেশে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় থেকে শুরু করে স্থানীয় একাধিক নেতা খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার আহহ্বান জানান।
এর আগে দুপুরে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা বিমানে সিলেটে পৌঁছান। নগরীতে পৌঁছে বিএনপির শীর্ষ নেতারা হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজার জিয়ারত করেন।