বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

বেতাগীতে বিলুপ্তির পথে দোয়েল পাখি

বেতাগীতে বিলুপ্তির পথে দোয়েল পাখি

বেতাগীর বনাঞ্চলের পরিবেশ দুষণ, নির্বিচারে গাছ কাটা, জমিতে কীটনাশকের অধিক ব্যবহার, পাখির বিচরণ ক্ষেত্র ও খাদ্য সঙ্কট আর জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে বিলুপ্তির পথে দোয়েলসহ দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন পাখি।

দেশের ঐতিহ্য বহনকারী জাতীয় পাখি দোয়েল এখন বিলুপ্তির পথে। এক সময় গাছের ডালে, বনে জঙ্গলে দোয়েলসহ নানা ধরনের পাখি দেখা গেলেও কালের আবর্তে চিরচেনা সেই পাখির তেমন দেখা মিলছে না । বিশেষ করে শীতের এ মৌওসুমে পাখির কলরবে মুখরিত ছিলো গ্রামের পরিবেশ। কিন্তু কালের আবর্তে এখন পাখিশূন্য হতে চলছে।

বেতাগী সরকারি কলেজের শিক্ষক শক্তিপদ বিশাস বলেন, দোয়েল পাখি বসবাসের অনুকুল পরিবেশ না থাকায় ধীরে ধীরে এ প্রজাতির পাখি বিলুপ্তি হচ্ছে।

বেতাগী বিএলবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা লিপিকা মন্ডল অর্পিতা বলেন,’ কয়েক বছর আগেও মানুষের ঘুম ভাঙ্গতো পাখির ডাকে। ওই সময় বোঝা যেত ভোর হয়েছে। এখন দোয়েল পাখির ডাক হারিয়ে গেছে, এখন গাছ-গাছালিতে পাখির ডাক নেই।

সাংবাদিক সাইদুল ইসলাম মন্টু বলেন, দোয়েল পাখির এখন আর দেখা মেলে না। সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় বাঁশ গাছে, আমের ডালে, সজিনা গাছে, বাড়ির ছাদে যে পাখি সব সময় দেখা যেতো, সেই পাখি এখন আর চোখে পড়ে না। তবে কম সংখ্যক টিয়া, ঘুঘু, কাক, মাছরাঙ্গা, কাঠঠোকরা, পান কৌড়ি, বক, হলদে , বৌ কথা কও ইত্যাদি পাখি শহর, গ্রাম-গঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেলেও জাতীয় পাখি দোয়েল তেমন আর মানুষের চোখে পড়ে না।

পাখি প্রিয় অনেক সৌখিন মানুষের বাড়ির খাচায় বন্দি করে পাখি পালন করতে দেখা যায়। বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর পাখি পালনকারী বেতাগী বাসস্ট্যান্ডের এরশাদ বলেন, দোয়েলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বিলুপ্তির পথে। নতুন প্রজন্ম ওই পাখি দেখতে পান না, তাছাড়া পাখি শিকারীদের কারণে পাখিশূন্য হয়ে পড়েছে বনাঞ্চল।

তাই বাধ্য হয়ে বাড়িতে বসেই বেশ কিছু প্রজাতির পাখি পালন করেছি। কৃষক কৃষ্ণকান্ত ঘরামী বলেন, জমিতে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় পাখি মরে যাচ্ছে, আবার খাদ্য সঙ্কট ও আভাসস্থল কমে যাওয়ায় পাখি বংশ বিস্তার করতে পারছে না, এতে কমে যাচ্ছে পাখি।

পরিবেশ রক্ষায় যেসব পাখি বিলুপ্তির পথে এসব পাখি সংরক্ষনে জরুরি বলে মনে করছেন অনেকে। বেশি মুনাফার আশায় বনে শিকারীরা বিভিন্ন ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করে বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে শিকারের হাত থেকে বাঁচাতে জীবন রক্ষার্থে পাখি অন্যত্র চলে যাচ্ছে। অনেক সময় তাদের হাতে মারাও যাচ্ছে পাখি। অথচ প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা নেই বলে অনেকের অভিযোগ।

এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা বন কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র রায় বলেন, শীত মৌওসুমে পাখি শিকারের কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকে। এ ছাড়া অন্য সময় তেমন শিকার হয় না। তিনি আরো বলেন, বন্য প্রাণী ও পাখির আভাসস্থলে সামান্য খাদ্যের সঙ্কট থাকলেও উপকূলের বন রক্ষায় বন বিভাগ তৎপর রয়েছে। বন রক্ষা হলে পশু-পাখি, বন্যপ্রাণীও রক্ষা হবে।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা: আব্দুল্লাহ বলেন,’ জমিতে মাত্রারিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এবং শীত মৌওসুমে শিকারীদের পাখি নিধন বন্ধ করতে হবে।

উপকূলের বন ও পরিবেশ রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে জাতীয় পাখি দোয়েলসহ দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন পাখির দেখা মিলবে না বলে মনে করেছেন সচেতনমহল।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech