গ্রুপ স্টাডির কথা বলে রাজধানীর কলাবাগানে মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলার আসামি তানভীর ইফতেফার দিহান দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে আসামি দিহান ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। এর আগে জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কলাবাগান থানার পুলিশ পরিদর্শক আ ফ ম আসাদুজ্জামান। এরপর দিহানকে কারাগারে পাঠানো হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান বলেন, ‘অত্যন্ত পাশবিকতার আশ্রয় নিয়ে, নিষ্ঠুরতার আশ্রয় নিয়ে সম্ভাবনাময় একজন মেধাবী ছাত্রীকে সে নির্মমভাবে হত্যা করে। সে তার নিজের দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।’
ভুক্তভোগীর বাবা গণমাধ্যমকে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দিহান তার মেয়েকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তদন্তকারীরা দিহানের তিন বন্ধুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হবে।
মামলার প্রধান অভিযুক্ত তানভীর ইফতেফার দিহানকে একমাত্র আসামি করে মেয়েটির বাবা ধর্ষণ ও হত্যার মামলা দায়ের করেন রাজধানীর কলাবাগান থানায়।
মামলার এজহারে মৃত ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮ টায় আমার স্ত্রী অফিসের জন্য এবং আমি সকাল সাড়ে ৯ টায় ব্যবসায়ীক কাজে বের হয়ে যাই। পরে আনুশকা সকাল সাড়ে ১১ টায় আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলে সে কোচিং এর পেপার্স আনতে বাহিরে যাচ্ছে। এই কথা বলে সে সকাল ১১ টা ৪৫ মিনিটে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।
তিনি বলেন, বেলা ১টা ১৮ মিনিটে ইফতেখার ফারদিন দিহান আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলে আনুশকা তার বাসায় গিয়েছিল, আনুশকা সেখানে হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়ায় তাকে রাজধানীর আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ হাসপাতলের জরুরি বিভাগে ভর্তি করিয়েছে। এ কথা শুনে আমার স্ত্রী বেলা ১টা ৫২ মিনিটের দিকে হাসপালে পৌঁছায়। সেখানে গিয়ে আমার স্ত্রী কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে জানতে পারে আনুশকাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
তিনি এজাহারে আরও অভিযোগ করেন, আমরা বিভিন্নভাবে জানতে পারি দিহান আমার মেয়েকে প্রেমের প্রলুব্ধে ধর্ষণের উদ্দ্যেশ্যে তার বাসায় বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে দিহান ফাঁকা বাসায় আমার মেয়েকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময় অমানবিক কার্যকলাপ করায় আনুশকার গোপানাঙ্গ দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে অচেতন হয়ে যায়। পরে ধর্ষণের ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে দিহান চালাকি করে আমার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার মেয়ে মৃত ঘোষণা করেন।