বেতাগী ॥ মাঘের প্রথম সপ্তাহ চলছে। শীতের ভরা মৌসুম। অথচ এরমধ্যেই বরগুনার বেতাগীতে অনেক আম গাছে মুকুলের দেখা মিলছে। এতে চাষি ও বগানের মালিকরা খুশি। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ভরা শীতে গাছে মুকুল আসা তেমন ভালো নয়। কারণ আগেভাগে আসা মুকুল ঘন কুয়াশায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ফলে শঙ্কা রয়েছে আমের ফলন কমে যাওয়ার।
চলতি মাঘ মাসের প্রথম সপ্তাহেই দেশি জাতের আম গাছে এই মুকুল দেখা গেছে । অবশ্য চাষিদের আশা, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আর বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে।
উপজেলার কয়েকটা গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আম গাছে মুকুল আসতে শুরু হয়েছে। সোনারাঙা সেই মুকুলের পরিমাণ কম হলেও সৌরভ ছড়াচ্ছে বাতাসে।
আমচাষি ও বাগান মালিকরা জানান, বিভিন্ন এলাকা জুড়ে শীতের তীব্রতা বিরাজ করলেও আগাম জাতের সব আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। পৌষের শেষের দিকে গাছে মুকুল আসার লক্ষণ দেখা গিয়েছিল। মাঘের শুরুতেই মুকুল বের হয়েছে, এ কারণে বাগানে পরিচর্যা বাড়িয়েছেন তারা।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য কোর্স সম্পন্নকারী কৃষিবিদ লিটন কুমার ঢালী জানায়, ‘ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় অবধি বারোমাসি বা লোকাল জাতের আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়।
তবে এবার জানুয়ারির শুরুতেই মুকুল আসা শুরু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসেই মূলত আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়। শীতের তীব্রতা, তাপমাত্রা ও ঘন কুয়াশার কারণে গাছের মুকুল নষ্ট হতে পারে।
মোকামিয়া ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামের দেশীয় জাতের আম চাষি রতন হাওলাদার জানান, তার আম বাগানের অধিকাংশ গাছেই মুকুল দেখা দিয়েছে। তবে কিছুদিন থেকে ঘন কুয়াশার কারণে মুকুল কিছুটা হতে পারে এমন আশঙ্কায় রয়েছি।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যান তত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, ‘ দেশীয় ও বারোমাসী জাতের গাছে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে।
মূলত ঘনকুয়াশার কারণে দেশি জাতের (বিশেষ করে আঁটি ও ফজলি আম) গাছে এই আগাম মুকুলে ছত্রাকে নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ঘন কুয়াশার কবলে না পড়লে, এসব মুকুলে ভালো আম হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘তবে নিয়ম মেনে মাঘের শেষ দিকে যেসব গাছে মুকুল আসে, তাতে আরও বেশি ফলন হয়।