সরকারি ব্রজমোহন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বরন্যে শিক্ষাবিদ প্রফেসর মোঃ হানিফকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বরিশালের সর্বস্তরের মানুষ।
মঙ্গলবার দুপুর দুইটায় নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে নাগরিক শ্রদ্ধার আয়োজন করা হয়।
সেখানে লাশবাহি গাড়িতে করে নেয়া হয় সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রফেসর মো: হানিফকে।
তার মরদেহে প্রথম শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
এরপরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. ছাদেকুল আরেফিন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, বরিশাল মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল, বরিশাল প্রেসক্লাব, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি, বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদ, বরিশাল জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ, বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়ন, বরিশাল শিক্ষক সমিতি, ভোলা জেলা কল্যান সমিতি, ইসলামিয়া কলেজ, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, মহিলা পরিষদ, অমৃত পরিবার, খেয়ালী গ্রুপ থিয়েটার, বরিশাল জেলা খেলাঘর আসর, বরিশাল জেলা ছাত্রলীগ, শব্দাবলী গ্রুপ থিয়েটার, জাতীয় নজরুল সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ, উদীচী, বরিশাল নাটক, বাংলাদেশ গার্লস গাইড, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক সংগঠন সহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ প্রফেসর মোঃ হানিফের মরদেহে শেষ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন।
আছরবাদ বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজ মাঠে তার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
পরে বরিশালের মুসলিম গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, প্রফেসর মোঃ হানিফ বরিশালের অমূল্য রত্ন ছিলেন। শিক্ষার প্রসারে তার যে ভূমিকা সেটা বরিশালবাসী আজীবন স্মরণ করবেন। এমন শিক্ষাবিদের প্রয়ানে আমরা গভীর শোকাহত।
সরকারি ব্রজমোহন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ স ম ইমানুল হাকিম বলেন, ১৯৮৮ সাল থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত হানিফ স্যার ব্রজমোহন কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি এই কলেজের উন্নয়নে ভূয়সী ভূমিকা রাখেন। তার হাত ধরেই ব্রজমোহন কলেজ উন্নয়নের রুপ পায়। এছাড়া শিক্ষার প্রসারে তার যে ভূমিকা ছিলো তা অতুলনীয়। তিনি আজীবন বেঁচে থাকবেন সাধারণ মানুষের মাঝে। এই অঞ্চলে শিক্ষা প্রসারে তার ভূমিকা ভোলার নয়।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাহাউদ্দিন গোলাপ বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে হানিফ স্যারের ভূমিকা ছিলো ব্যাপক। তার মৃত্যুতে আমরা আমাদের অভিভাবক হারিয়েছি বলে মনে করছি। আমাদের শিক্ষার বাতিঘর হিসেবে তাকেই আমরা চিনি। তাকে শিক্ষকদেরও শিক্ষক বলা হতো বরিশালে।
প্রফেসর মোঃ হানিফ দীর্ঘদিন যাবৎ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। সোমবার রাতে রাজধানীর ইবনেসিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। প্রফেসর মোঃ হানিফ ১৯৩৬ সালের ১ জানুয়ারি ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার গৌড়নগর ইউনিয়নের চতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি বরিশালের সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের অধ্যক্ষ পদে অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন। এরপর ১৯৮৮ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি সরকারি ব্রজমোহন কলেজের অধ্যক্ষ পদে ছিলেন। এই সময়কালে তিনি ব্রজমোহন কলেজের উন্নয়নে এবং অবকাঠামোগত আমূল পরিবর্তন আনেন। দক্ষিণাঞ্চলে শিক্ষার প্রসারে তার অবদান অনেক।