সমুদ্র উপকূলে নজরদারি, চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর ব্যবহার, এলওসি বাস্তবায়নসহ কয়েকটি বিষয়ে বাংলাদেশ এবং ভারত দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার অংশ হিসেবে সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। এর মধ্যে চারটি হচ্ছে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ), একটি স্ট্যান্টার্ড অপারেশন প্রসিডিউর (এসওপি), একটি চুক্তি এবং অপরটি একটি কর্মসূচির নবায়ন।
এগুলো হলো- সমুদ্র উপকূলে নজরদারি (কোস্টাল সারভেইলেন্স সিস্টেম-সিএসএস) বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ও ভারত সরকারের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক, ভারতের পণ্য পরিবহনে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারবিষয়ক চুক্তি সম্পর্কিত একটি এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) স্বাক্ষর এবং ত্রিপুরায় সাবরুম শহরে পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পে ফেনী নদী থেকে থেকে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহার বিষয়ে বাংলাদেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ভারতের জলশক্তি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক।
চুক্তি হয়েছে- ভারত থেকে নেয়া ঋণের প্রকল্প বাস্তবায়নের (এলওসি) বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি। এছাড়া হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি সমঝোতা স্মারক, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি বিষয়ে চুক্তি নবায়ন এবং যুব উন্নয়নে বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং ভারতের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
শনিবার দুুপুরে নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউজে বৈঠকে বসেন দুই দেশের সরকারপ্রধান। তাদের উপস্থিতিতেই চুক্তি সই ও চুক্তিপত্র বিনিময় হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউজে পৌঁছলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে অভ্যর্থনা জানান।
ঐতিহাসিক হায়দরাবাদ হাউজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর উভয়ের উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে এই স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় এ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরুর আগে দুই নেতা কিছুক্ষণ একান্তে কথা বলেন।
চুক্তি ও সমঝোতাপত্র বিনিময়ের পর শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে তিনটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন। প্রকল্পগুলো হলো- খুলনায় ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট, ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে বিবেকানন্দ ভবন এবং বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় এলপিজি আমদানি প্রকল্প।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারদিনের সরকারি সফরে বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লি যান। টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটাই তার প্রথম দিল্লি সফর। তিনি ২০১৭ সালের এপ্রিলে সর্বশেষ দিল্লি সফর করেন।
এদিনই বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ভবনে সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে। আগামীকাল রোববার প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।