বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

প্রচন্ড তাপদাহে আমতলীতে বেড়েছে তালের শাঁসের কদর

প্রচন্ড তাপদাহে আমতলীতে বেড়েছে তালের শাঁসের কদর

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:
প্রচন্ড তাপদহে আমতলীতে তালের শাঁসের কদর বেড়েছে। মানুষ শরীরে পুষ্টির চাহিদা মেটাতে তালের শাঁস কিনে খাচ্ছেন। দাম কিছুটা বেশী হলেও সে দিকে তাকাচ্ছেন না ক্লান্ত ও পরিশ্রমী মানুষগুলো। শহরের বেশীর ভাগ শ্রমজীবি মানুষের কাছে তালের শাঁসের কদর বেশী।
জানাগেছে, তাল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম “ ইড়ৎধংংঁং ভষধনবষষরভবৎ”। এটি এশিয়া ও আফ্রিকার গ্রীষ্মকালীন ফল গাছ। ওই গাছের ফলকে তাল বলা হয়। গ্রামাঞ্চলে পানি তাল হিসেবে পরিচিত। তাল এরিকাসি পরিবারের বরাসুস গণের একটি সস্পুক উদ্ভিদ। তালের ফল এবং বীজ বাঙালির খাদ্য। তালের ফলের ঘণ নির্যাস থেকে তাল ফুলুরি তৈরি হয়। তালের বীজও খাওয়া হয় লেপা বা তালশাঁস নামে। তালে রয়েছে প্রচন্ড ভিটামিন এ,বি ও সি, জিংক পটাশিয়াল, আয়রন ও ক্যালসিয়ামসহ অনেক খনিজ উপাদান। এর সাথে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান রয়েছে বলে জানা পুষ্টিবিদ ডাঃ মাসুম বিল্লাহ। প্রচন্ড তাপদাহে ক্লান্ত মানুষ তালের শাঁসের প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন। শরীরের ক্লান্তি দুর করতে মানুষ তালের শাঁস খাচ্ছেন। তবে এ বছর প্রচন্ড তাপদাহে তালের শাঁসের কদর গত কয়েক বছরের তুলনায় বেশী। তালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার ব্যবসায়ীরা গ্রামগঞ্জ থেকে তাল সংগ্রহ করে সড়কের পাশে ও অলিগলিতে বিক্রি করছে। মানুষ অহরহ ফরমালিন মুক্ত এ ফল খেয়ে খাচ্ছেন। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এ ফলে ৯২ দশমিক ৩ শতাংশ জলীয় অংশ, ক্যালরী ২৯, শর্করা ৬ দশমিক ৫ গ্রাম, ক্যালমিয়ান ৪৩ মিলিগ্রাম, খনিজ শুন্য দশমিক ৫ মিলিগ্রাম ও ৪ মিলিগ্রাম রয়েছে বলে জানান পুষ্টিবিদ ডাঃ মাসুম বিল্লাহ। তালের চাহিদা থাকায় বিচি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। বড় তাল প্রতি বিচি শাঁস ৫ টাকা করে তিন বিচি তালের শাঁস বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। আবার ছোট তালের বিচির শাঁস ৩ টাকা হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা মুল্যের দিতে না তাকিয়ে স্বাছন্দে কিনে নিচ্ছেন।
মঙ্গলবার আমতলী পৌর শহরের একে স্কুল বাঁধ, চৌরাস্তা, হাসপাতাল প্রাঙ্গণ, লঞ্চঘাট ও আমতলী-পটুয়াখালী মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান ঘুরে তালের শাস বিক্রি করতে দেখাগেছে। প্রতি বিচি শাঁস ৫ টাকা দরে মানুষ কিনে নিচ্ছে।
হলদিয়া ইউনিয়নের তুজির বাজার এলাকার তাল ব্যবসায়ী মন্টু মোল্লা বলেন, গ্রাম থেকে গাছ মুলে তাল ক্রয় করে ভ্যানে গ্রামগঞ্জে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করি। প্রতি পিস তাল কিনতে হয় প্রকারভেদে ৩ থেকে ৭ টাকা। বিক্রি করি ৫ থেকে ১২ টাকা। তিনি আরো বলেন, গত ১৫ দিন ধরে বিক্রি করছি। এতে দৈনিক ৯’শ থেকে এক হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আয় যেমন কষ্টও তেমন।
আমতলী পৌর শহরের একে স্কুল লেক পাড়ের নারী তালের শাঁস ব্যবসায়ী মোসাঃ মঞ্জু বেগম বলেন, ছোট তাল ৩ টাকায় ক্রয় করে বিচি হিসেবে ৫-৬ টাকা এবং বড় তাল ৭ টাকায় ক্রয় করে বিচি হিসেবে ১২- ১৫ টাকায় বিক্রি করছি। এতে দৈনিক গড়ে এক হাজার থেকে এক হাজার দুই’শ টাকা বিক্রি হয়। তিনি আরো বলেন, রোধ বৃদ্ধি পেয়ে তাদের চাহিতা বাড়ে। রোদ কমলে চাহিদা কমে যায়।
ক্রেতা বেলাল মিয়া বলেন, পরিবার পরিজনের জন্য ১০ টাকা পিস হিসেবে এক ডজন তাল কিনেছি। তিনি আরো বলেন, বাজারে পানি তালের চাহিদা বেশী।
ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ বিশ^বিদ্যালয়ের নিউট্রিশন বিভাগের পুষ্টিবিদ বিইউএমএস (ডিইউ) এমপিএইচ- নিউট্রিশন (বিএসএমএমইউ) ডাঃ মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, তাল স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী একটি আশ যুক্ত জাতীয় পদার্থ। তাল খেলে শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বৃদ্ধি পায় এবং পানি ভিটামিনের অভাব দুর হয়। তিনি আরো বলেন, পরিস্কার পরিছন্নভাবে তালের শাস খেতে হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাল খুবই উপকারী।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল মোনায়েম সাদ বলেন, তালের শাঁসের অনেক উপকারীতা রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ আছে। তালের শাঁস একটি আশযুক্ত খাবার। এ শাঁস খেলে ক্লোণ ক্যান্সারের সম্ভাবনা কম থাকে। তিনি আরো বলেন, পরিস্কার পরিছন্নভাবে না খেলে আবার ডায়েরিয়ারও ঝুঁকি থাকে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech