মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাগরে ইলিশসহ সব প্রজাতির মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়। বুধবার (১৯ মে) মধ্যরাত থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের জন্য এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
কিন্তু সরকারের এই কর্মসূচি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ভোলার জেলেদের মাঝে। এই নিষেধাজ্ঞাকে অযৌক্তিক বলে মনে করছেন জেলেরা। করোনার বিরূপ প্রভাব এবং জেলেদের অর্থনৈতিক দূরাবস্থার কথা বিবেচনায় রেখে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা বাতিল অথবা পরিবর্তনের দাবি তাদের।
তারা জানিয়েছেন, এমন নিষেধাজ্ঞা থাকলে নৌকা, জাল, জ্বালানি ও শ্রমজীবী জেলেদের ব্যয় নির্বাহ করে এ পেশায় টিকে থাকা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। এ অবস্থায় এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার অথবা সময় কমিয়ে ১ মাসে আনার দাবি জানিয়েছেন তারা। এছাড়া তাদের জন্য বরাদ্ধকৃত প্রণোদনা প্রকৃত জেলেদের মাঝে সঠিক সময়ে বিতরণের দাবিও করেন তারা।
জেলে মমিন বলেন, কয়েকদিন আগে দিলো দুই মাসের অভিযান। এখন আবার ৬৫ দিনের অভিযান। এরকম কয়েকদিন পর পর যদি অভিযানই থাকে তাহলে মাছ না ধরলে আমরা খামু কি? আমরা তো না খাইয়া মারা যামু।
আরেক জেলে মোহাম্মদ ফারুক বলেন, সরকার অভিযান দিছে এখন আমাদের এটা মানতে হবে। কিন্তু সরকার আমাদেরকে যে চাল দেয় সেটা যেন কোনো নেতাকর্মীর মাধ্যমে না দেয়। নেতাকর্মীর মাধ্যমে দিলে আমরা ঠিকমত চাল পাইনা। তাই চালটা যেন সরাসরি আমাদের জেলেদের হাতে দেয়।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজাহারুল ইসলাম জানান, গত দুই বছর এ কর্মসূচী বাস্তবায়িত হওয়ায় গত বছর ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়েছে। ফলে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে মৎস্য বিভাগ আরো গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে। এসময় মাছ শিকার থেকে বিরত থাকা জেলেরা যাতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে সেজন্য ভোলার ৬৩ হাজার ৯ শত ৫৪ জন সমূদ্রগমী জেলের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এবং যথা সময়ে প্রণোদনার চাল বিতরণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাগরে মাছ শিকারে গেলে জেলেদেরকে কারাদণ্ড কিংবা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
উল্লেখ্য, মার্চ-এপ্রিল দুই মাস নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় ভোলা জেলার ৭ উপজেলায় ১ শত ৬৪ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ৩ শত ৩০ জন জেলেকে প্রায় ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।