আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:
কিশোর গ্যাং লিডার শাহাবুদ্দিন শিহাব ও তার সহযোগীরা ছাত্রলীগ নেতা রাহাত মৃধা তার ভাই ফারহাদ মৃধা ও বন্ধু বেলাল উদ্দিন বাপ্পিসহ পাঁচ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। গুরুতর আহত রাহাত মৃধা ও ফরহাদ মৃধাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। ঘটনা ঘটেছে আমতলী পৌরসভার কেন্দ্রীয় ঈদগা ময়দানে মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে।
জানাগেছে, আমতলী সরকারী কলেজ ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী রাহাত মৃধার বন্ধু বেলাল হোসেন বাপ্পির সাথে কিশোর গ্যাং সদস্য ইমরান মোল্লার সাথে গত সোমবার তুচ্ছ ঘটনায় বিরোধ হয়। ওই বিরোধ মিমাংশার জন্য মঙ্গলবার রাতে বন্ধুর পক্ষ হয়ে রাহাত মৃধা কিশোর গ্যাং সদস্য ইমরানকে ফোন দেয়। ইমরানের ফোন কিশোর গ্যাং লিডার শাহাবুদ্দিন সিহাব কেড়ে নিয়ে রাহাতকে হাত কেটে নেয়ার হুমকি দেয় এমন দাবী ছাত্রলীগ নেতা রাহাত মৃধার। এ বিষয়টি তাৎক্ষনিক মিশাংসার জন্য ওই রাতেই ছাত্রলীগ নেতা রাহাতের মামা মোঃ সেলিম তাদের আমতলী কেন্দ্রিয় ঈদগা ময়দানে ডেকে নেন। মামার ডাকে রাহাদ মৃধা তার ভাই ফরহাদ মৃধা ও বন্ধু বেলাল হোসেন বাপ্পি ঈদগা ময়দানে যায়। ওই ময়দানে ওত পেতে থাকা কিশোর গ্যাং লিডার মোঃ শাহাবুদ্দিন শিহাব, ইমরান মোল্লা, নোমান মোল্লা, মিরাজুল ইসলাম মিরাজ ও মেহেদীসহ ১০-১৫ জনের কিশোর গ্যাং ছাত্রলীগ নেতা রাহাত তার ভাই ফরহাদ, মামা সেলিম, বন্ধু বেলাল হোসেন বাপ্পি ও কালুকে চাপাতি, হাতুরী ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। কিশোর গ্যাং লিডার শাহাবুদ্দিন শিহার ও তার সহযোগীদের হাতুরী পেটা ও রামদার কোপে রাহাত মৃধা ও তার ভাই ফরহাদ মৃধা গুরুতর যখম হয়। খবর পেয়ে কাউন্সিলর মোঃ রিয়াজ উদ্দিন মৃধা ঘটনাস্থলে গিয়ে রক্তাক্তবস্থায় রাহাত মৃধা ও তার ভাই ফরহাদ মৃধাসহ আহতদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালে গুরুতর আহত দুই ভাইকে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ওইদিন রাত সাড়ে ১০ টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে আহতদের দেখে আসেন।
বুধবার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখাগেছে, রাহাত মৃধার মাথায় ব্যান্ডেজ এবং তার ভাই ফরহাদের সারা শরীরে রক্তাক্ত যখমের চিহৃ।
আহত ছাত্রলীগ নেতা রাহাত মৃধা বলেন, কিশোর গ্যাং লিডার মোঃ শাহাবুদ্দিন শিহাব, ইমরান মোল্লা, নোমান মোল্লা, মিরাজুল ইসলাম মিরাজ ও মেহেদীসহ ১০-১৫ জন কিশোর সন্ত্রাসী আমাকে কুপিয়েছে এবং আমার ভাইকে চাপাতি ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত যখম করেছে। তিনি আরো বলেন, আমাদেরকে রক্ষায় আমার মামা সেলিম, কালু এগিয়ে গেলে তাদেরও মারধর করেছে। আমি এ ঘটনায় শাস্তি দাবী করছি।
এ বিষয়ে কিশোর গ্যাং লিডার শাহাবুদ্দিন সিহাব মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, একটু ঝামেলা হয়েছে।
আমতলী পৌরসভার কাউন্সিলর মোঃ রিয়াজ উদ্দিন মৃধা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে রাহাত, ফরহাদ, রাপ্পিসহ আহতদের উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করেছি। তিনি আরো বলেন, কিশোর গ্যাং লিডার শাহাবুদ্দিন শিহাব, ইমরান মোল্লা ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। দ্রুত এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তিনি।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, রাহাদের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত এবং ফরহাদের সারা শরীরে রক্তাক্ত যখমের চিহৃ রয়েছে।
আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) রনজিত কুমার সরকার বলেন, খবর পেয় হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়। এ বিষয়ে অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।