এস এম আলমাস,কুয়াকাটা- মহিপুর প্রতিনিধি :
করোনাকালীন সময় পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় কুয়াকাটায় পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীদের সমস্যা ও উত্তোরণ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) এর উদ্যোগে শুক্রবার সকাল ১০ টায় আবাসিক হোটেল নীলাঞ্জনা’র। হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। টোয়াক সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার’র সভাপতিত্ব করেন। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কুয়াকাটা পৌর মেয়র জনাব মোঃ আনোয়ার হাওলাদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোন’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সোহরাব হোসেন, কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক এম এ মোতালেব শরীফ, কুয়াকাটা প্রেসক্লাব সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব, পৌর কাউন্সিলর শহিদ দেওয়ান,আবুল হোসেন ফরাজী, টোয়াক সেক্রেটারী জেনারেল আনোয়ার হোসেন আনু। সভায় টোয়াক সদস্যসহ কুয়াকাটা পর্যটন নির্ভর বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন ।
সভায় বক্তারা বলেন,করোনাকালীন লকডাউনের কারনে গত ২ মাস বন্ধ রয়েছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতসহ আবাসিক হোটেল মোটেল রিসোর্ট ও পর্যটনমুখী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এতে পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পরেছে। এর সাথে জরিত প্রায় ৫ হাজার পরিবার বেকার হয়ে পরেছে। এর সাথে জরিত অনেকেই ইতিমধ্যে পেশা পরিবর্তনের চিন্তা করছেন। বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পরেছে। চরম সমস্যায় দিন কাটাচ্ছেন পর্যটন নির্ভর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। বক্তারা আরও বলেন, সকল শিল্প কলকারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, লঞ্চ চলাচল, সড়ক ও রেল যোগাযোগ চালু রয়েছে। শুধু বন্ধ রয়েছে পর্যটন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে পর্যটন স্পটগুলো গুলো চালু রাখার দাবী জানান বক্তারা।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ট্যুর অপারেটর কেএম বাচ্চু ও আসাদুজ্জামান মিরাজ জানান, দীর্ঘ সময়ে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের আগমনের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তারা এখন বেকার জীবন যাপন করছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে পর্যটন স্পট গুলো খুলে না দিলে তাদের পেশা পরিবর্তন ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না বলে জানান এই দুই ট্যুর অপারেটর।
কুয়াকাটা প্রেসক্লাব সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব বলেন, করোনার মধ্যে সবকিছু স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে পারলে পর্যটন কেনো পারবেনা। স্বাস্থ্য বিধি মেনে পর্যটকদের সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে হোটেল মোটেল রিসোর্ট মালিক কর্মচারীরা।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, কুয়াকাটা পর্যটন খাতে বিনিয়োগকারীরা এখন তাদের বিনিয়োগ নিয়ে খুবই চিন্তিত। প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারী বেতনসহ প্রতি মাসে তাদের লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। ব্যাংক লোনের কিস্তি দিতে না পারায় ব্যাংক থেকে নোটিশ দেয়া হচ্ছে। সরকার করোনাকালীণ সময়ে বিভিন্ন খাতে প্রনোদণা দিলেও পর্যটন খাতে বিনিয়োগকারীদের কোন প্রনোদণা দিচ্ছে না। যার ফলে কুয়াকাটায় একাধিক হোটেল মালিক তাদের হোটেল বিক্রি করে অন্য খাতে বিনিয়োগের কথা ভাবছেন। তিনি আরো বলেন যাদের ব্যাংকে লোন রয়েছে তাদের ইনটারেষ্ট যেন সরকার মৌকুপ করেন।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, আমার পৌরসভা পর্যটন এলাকার মধ্যে, তাই পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় আমার কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা দিতে পারছিনা। কারণ কোনো প্রতিষ্ঠান পৌর ট্যাক্স দিচ্ছে না। এটা এখন চরম বাস্তবতা। তিনি বলেন, পর্যটন খাতে বিনিয়োগকারী সকলেরই একই অবস্থা। সকলেই এখন অসহায় জীবনযাপন করছেন। তাই দ্রুত স্বাস্থ্য বিধি মেনে পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ার দাবী জানান তিনি।
সভা শেষে ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোন’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সোহরাব হোসাইনকে পর্যটন খাতে অবদানের জন্য সম্মানণা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়। সভা সঞ্চালনা করেন টোয়াক সদস্য ও বাংলা ভিশনের সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম মিরন ।