বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন। আটকে জোরপূর্বক সাদা (ফাঁকা) স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর!

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন। আটকে জোরপূর্বক সাদা (ফাঁকা) স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর!

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
জমি কেনার দুই লক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য স্ত্রী জান্নাতি আক্তারকে স্বামী সাইফুল মুসুল্লী মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বামী সাইফুল ও তার পরিবারের লোকজন আটকে জোরপূর্বক সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে জান্নাতি ও তার বাবা ছালাম খাঁনকে তাড়িয়ে দিয়েছেন এমন অভিযোগ জান্নাতির ও তার বাবার। আহত জান্নাতিকে শুক্রবার সকালে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে গলাচিপা উপজেলার নলুয়াবাগী গ্রামে।
জানাগেছে,গত বছর মে মাসে আমতলী উপজেলার পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের ছালাম খানের কিশোরী কন্যা জান্নাতিকে পাশর্^বর্তী গলাচিপা উপজেলার নলুয়াবাগী গ্রামের শহিদুল মুসুল্লীর ছেলে সাইফুলের কাছে বিয়ে দেয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে জামাতাকে এক ভরি স্বর্নালংকার ও প্রয়োজনীয় আসবাব পত্র দেন শ^শুর ছালাম খাঁন। কিন্তু বিয়ের কয়েকদিন যেতে না যেতেই জামাতা সাইফুল মুসুল্লী শ^শুর ছালাম খাঁনের কাছে যৌতুক দাবী করেন। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার স্থানীয়ভাবে শালিস বৈঠক হয়। বৃহস্পতিবার সকালে জমি ক্রয়ের জন্য স্ত্রী জান্নাতিকে তার বাবার কাছ থেকে দুই লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলে স্বামী সাইফুল। এ টাকা দিতে অস্বীকার করে জান্নাতি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বেধরক মারধর করে। মারধরে জান্নাতির চোখ, মুখমন্ডল ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। জান্নাতিকে মারধরের বিষয় গোপন রেখে সাইফুলের বাবা শহিদুল মুসুল্লী বেয়াই ছালাম খাঁনকে রাতে তার বাড়ীতে দাওয়াত দেন। দাওয়াত পেয়ে ছালাম খাঁন ওইদিন রাতে মেয়ের বাড়ীতে যান। ওইখানে গিয়ে দেখতে পান মেয়েকে বেধরক মারধর করেছে তারা। মেয়েকে নিয়ে বাবা ছালাম খাঁন বাড়ীতে আসতে চাইলে জামাতা সাইফুল, বেয়াই শহিদুল মুসুল্লী ও তাদের সহযোগীরা তাদের ঘরের মধ্যে আটকে রাখেন। পরে তারা বাবা ছালাম খাঁন ও তার মেয়ে জান্নাতির সাদা (ফাকা) স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে তাড়িয়ে দেন। শুক্রবার সকালে আহত জান্নাতিকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত জান্নাতি কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, জমি কেনার দুই লক্ষ টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমাকে আমার স্বামী ও শ^শুর-শ^াশুড়ী মিলে বেধরক মারধর করেছে। তিনি আরো বলেন, মারধর করেই খ্যান্ত হয়নি আমার বাবাকে দাওয়াত দিয়ে ডেকে নিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে রাতে তাড়িয়ে দিয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে আসছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
জান্নাতির বাবা ছালাম খাঁন বলেন, মেয়েকে মারধরের বিষয়টি গোপন রেখে আমাকে বেয়াই শহিদুল মুসুল্লী দাওয়াত দিয়ে তার বাড়ীতে নেন। বাড়ীতে নিয়ে আমার কাছে দুই লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমাকে এবং আমার মেয়েকে আটকে জোরপূর্বক সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে তাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন গত এক বছরে অন্তত ৮ বার শালিস বৈঠক হয়েছে।
স্বামী সাইফুল মুসুল্লী মুঠোফোনে যৌতুক দাবীর কথা অস্বীকার এবং সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখার কথা স্বীকার করে বলেন, অল্প কথাকাটি হয়েছে। এ সময় রাগের বসত দু’একটি চরথাপ্পর দিয়েছি।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক হিমাদ্রী রায় বলেন, জান্নাতির চোখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহৃ রয়েছে। তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech