আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রভাবে আমতলী উপজেলায় ৫১ হাজার ৪’শ ৪৬ শ্রমজীবি মানুষ কর্মহীন হয়ে পরেছে। এতে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। দ্রুত সরকারীভাবে এদের সাহায্যের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানাগেছে, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ বিস্তার রোধে গত ১ জুলাই থেকে সরকার বিধি নিষেধ আরোপ করেছে। ওই বিধি নিষেধে মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। সরকার ঘোষিত লকডাউনের দশম দিন চলছে। সরকারের নির্দেশিত লকডাউন মানতে গিয়ে উপজেলার হতদরিদ্র, দরিদ্র ,রিক্সাচালক, ভ্যানচালক, মোটর সাইকেল চালক, দিনমজুরসহ শ্রমজীবি ৫১ হাজার ৪’শ ৪৬ মানুষ কর্মহীন হয়ে পরেছেন। কর্মহীন হয়ে পরায় তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
আমতলী উপজেলা পরিসখ্যাংন ব্যুরো অফিস সুত্রে জানাগেছে, উপজেলা জনসংখ্যা ২ লক্ষ ৫ হাজার ২’শ ১০ জন। এর মধ্যে উপজেলার ২৫.০৭ % মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে। ওই হিসেবে উপজেলায় ৫১ হাজার ৪’শ ৪৬ জন মানুষ হতদরিদ্র শ্রমজীবি। তারা দিন আনে দিন খায়। কাজ না জুটলে তাদের খাবার জুটে না। লকডাউনের কারনে এদের অধিকাংশ মানুষ কর্মহীন হয়ে পরেছে। দ্রুত এ সকল শ্রমজীবি অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেয়ার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
শনিবার আমতলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা প্রশাসন, নৌবাহিনী পুলিশ কঠোর ভাবেই লকডাউন পালনে কাজ করছে। সড়কে চলতে না যানবাহন। তারপর প্রশাসনের নজর এগিয়ে পরিবার পরিজনের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দেয়ার জন্য অটোরিকসা ও ইজিবাইক চলাচল করছে। কিন্তু সড়কে কোন বড় ধরনের যানবাহন চলাচল করছে না।
শ্রমজীবি আল আমিন, শামিম ও জাকির বলেন, লকডাউনের পর থেকে কোন কাম কাজ নাই। পোলাপান লইয়্যা খুব কষ্টে হরি। ঘরে য্যা ছিল হ্যা খাওয়া শ্যাষ। এ্যাহন গুড়াগাড়া লইয়্যা কি খামু হেইয়্যা কইতে পারি না।
অটোচালক বাবুল বলেন, কোন মতে ফ্যান পানি খাইয়্যা গুড়াগাড়া লইয়্যা বাইচ্চা আছি।
কাউনিয়া গ্রামের শ্রমজীবি কামাল বলেন, কোন কাজ নেই। লকডাউনে বাড়ীতে বসে অলস সময় কাটাচ্ছি। কিন্তু পেটতো অলস না। সেতো যথা সময়ে খাবার চায়। কি হরবো ভেবে পাচ্ছি না।
আমতলী বে-সরকারী সংস্থা নজরুল স্মৃতি সংসদের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট মোঃ শাহাবুদ্দিন পান্না বলেন, লকডাউনের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষগুলোকে সরকারী, বে-সরকারী ও বিত্তবানদের সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয়া উচিত। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে লকডাউনে কর্মহীন মানুষের কাজের জন্য নির্ধারিত সময় দেয়া প্রয়োজন। যাতে তারা উপার্জন করে পরিবার পরিজনের ভরণ পোষণ চালাতে পারে। নইলে কর্মহীন মানুষগুলো অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করতে হবে।
আমতলী উপজেলা পরিসখ্যান ব্যুরো অফিসার মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, উপজেলায় ২৫.০৭% মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারনে ওই মানুষগুলো কর্মহীন হয়ে পরেছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, উপজেলার শ্রমজীবি ও অসহায় মানুষকে সহায়তায় বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। সহায়তার এখনো বরাদ্দ পাইনি। বরাদ্দ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।