নিউজ ডেস্ক:
বরূপে সাঁজছে বরিশাল শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত জেলা স্টেডিয়াম। প্রথমবারের মতো বিদেশী কোন দলের বরিশাল স্টেডিয়ামে প্রতিযোগীতামূলক ক্রিকেট ম্যাচে অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে সাঁজ সাঁজ রব পড়েছে নির্জিব এই স্টেডিয়ামে।
বিসিবি ও স্থানীয় সংগঠক, কর্মকর্তা-প্রকৌশলী, গ্রাউন্ডসম্যানসহ ব্যস্ত সবাই। বাংলাদেশ এবং শ্রীলংকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ৪ দিনের প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ ঘিরেই এসব আয়োজন। আগামী ২৬ অক্টোবর ৪ দিনের এই ম্যাচ শুরু হলেও তার ৩ দিন আগেই ২৩ অক্টোবর বরিশাল আসছে দুই দল। তাদের থাকা-খাওয়া, অনুশীলন এবং নিরাপত্তার যাবতীয় ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছে প্রশাসন। এদিকে প্রথমবারের মতো বরিশালে কোন বিদেশী দলের খেলা আয়োজন নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে স্থানীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঝে।
কীর্তনখোলা নদীর তীরে নগরীর চাঁদমারী এলাকায় ১৯৬৬ সালে ২৯.২৫ একর জমিতে বরিশাল স্টেডিয়াম নির্মাণের পর ২০০৬ সালে ২৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে আধুনিকায়ন করা হয়। ৩টি আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট পিচ, ৩৫ হাজার দর্শক ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন গ্যালারী, ড্রেসিং রুম ও ম্যাচ অফিশিয়াল রুম সহ পাঁচতলা প্যাভিলিয়ন, ৩ তলা প্রেসবক্স, ফ্লাড লাইট সবই আছে বরিশাল স্টেডিয়ামে। ছিলো না শুধু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এমনকি বিপিএলও।
তবে ৫৩ বছরের বন্ধ্যাত্ব ঘুঁচিয়ে এবার বরিশাল স্টেডিয়ামে খেলতে আসছে শ্রীলংকান অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল। এ লক্ষ্যে নবরূজে সাঁজানো হচ্ছে দেশের অন্যতম বৃহত বরিশাল স্টেডিয়াম। বরিশালের ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঝেও সৃষ্টি হয়েছে বাড়তি উন্মাদনা।
ক্ষুদে ক্রিকেটার আরিফুর রহমান বলেন, শ্রীলংকা-বাংলাদেশ দলের খেলা দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। তাদের খেলা দেখে নতুন প্রজন্ম অনেক কিছু শিখতে পারবে। এ ধরনের ম্যাচ বেশী বেশী করে আয়োজনের দাবি তার।
সাবেক ক্রিকেটার মাসুদ সিকদার বলেন, বরিশাল স্টেডিয়ামে বিদেশী দল খেলবে, এটা ভাবতেই ভালো লাগছে। বরিশালে ভেন্যু দিয়ে বিসিবি সময়োপযোগী কাজ করেছে। আগামীতেও জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ চান এই স্টেডিয়ামে।
ক্রিকেট কোচ মাহমুদুল হায়দার তামিম বলেন, প্রতিষ্ঠার পর আজ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক কোন ম্যাচ হয়নি বরিশাল স্টেডিয়ামে। শ্রীলংকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সফর বরিশাল স্টেডিয়াম আন্তর্জাতিক ভেন্যুতে পরিণত হওয়ার একটা প্লাটফর্ম। এই ম্যাচে ভালো ব্যবস্থাপনা করে বরিশাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে উত্তীর্ন হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বিভাগীয় ক্রিকেট কোচ তাসরিকুল টোটাম বলেন, বরিশালে বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচ কিছু নেই’র মধ্যেও এক টুকরা আশার আলো। এই ম্যাচের মধ্যে দিয়ে বরিশালের ক্রিকেট প্রান চাঞ্চল্য ফিরে পাবে আশা তার।
বরিশাল জেলা ক্রীড়া সংস্থার অফিস সেক্রেটারী মো. মাইনুল ইসলাম জানান, বরিশাল স্টেডিয়ামের অবকাঠামো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সমতুল্য। কিন্তু ওই তুলনায় সুযোগ-সুবিধা ছিলো না। শ্রীলংকা অনূর্ধ্ব ১৯ দলের বরিশাল সফরকে কেন্দ্র স্টেডিয়ামে দুটি ড্রেসিং রুম, ম্যাচ অফিশিয়ালদের জন্য দুটি রুম, তৃতীয় তলায় আম্প্যায়ার ও স্কোরারদের জন্য একটি এবং প্রেসবক্সের জন্য একটি রুম শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করা হচ্ছে। আধুনিক আসবাবপত্র আনা হয়েছে এবং বাথরুম ফিটিংস নতুন করা হচ্ছে। আউট ফিল্ড নতুনভাবে মানসম্পন্ন করার কাজ চলছে। প্যাভেলিয়ন রং করা হচ্ছে।
বরিশাল জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, শ্রীলংকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সফরের খবরে বরিশালে বাড়তি উন্মাদনা সৃষ্টি হয়েছে। ২৬ অক্টোবর ৪ দিনের ম্যাচ শুরু হলেও ২৩ তারিখ দুই দল বরিশাল এসে পৌঁছবে। তারা স্থানীয় গ্র্যান্ডপার্ক হোটেলে থাকবেন। তাদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ২৯ অক্টোবর ম্যাচ শেষে তারা পরদিন ৩০ অক্টোবর খুলনার উদ্দেশ্যে বরিশাল ত্যাগ করবেন। সেখানেও স্বাগতিক দেশের বিরুদ্ধে ৪ দিনের একটি ম্যাচ খেলবে দ্বীপরাস্ট্রের এই দলটি।