করোনার সংক্রমণ বাড়ায় সারাদেশের বেশিরভাগ মানুষ যখন শ্বাসকষ্ট নিয়ে এই হাসপাতাল থেকে ওই হাসপাতালে ছোটাছুটি করছেন তখন ভিন্ন চিত্র পটুয়াখালীতে।
শতাধিক অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ফোনকলের অপেক্ষায় থাকেন এই এলাকার বিভিন্ন সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা। করোনায় আক্রান্তদের বাড়িতে বিনামূল্যে পৌঁছে দেন সেসব সিলিন্ডার।
সারাদেশের মতো পটুয়াখালীতেও প্রতিদিন শত শত মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে হাসপাতালে যেমন রোগীর চাপ বাড়ছে তেমনি তেমনি বাসা বাড়িতেও প্রয়োজন হচ্ছে অক্সিজের সিলিন্ডারের।
অন্য জেলা শহরগুলোতে উচ্চমূল্যে এসব অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনতে হলেও পটুয়াখালীর চিত্র একেবারেই ভিন্ন। এখানে কাউকেই অক্সিজেন কিনতে হয় না। দিন বা রাত নেই।
ফোন পেলেই পৌরসভাসহ অন্তত ১০টি সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রায় দেড়শ অক্সিজেন সিলিন্ডার বিনামূল্যে পৌঁছে দেন।
‘পটুয়াখালীবাসী’ নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি মাহমুদুল হাসান রায়হান বলেন, শহরের বিত্তবানদের সহযোগিতায় প্রথমে মাত্র দুটি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে আমরা ফ্রি অক্সিজেন সেবাদান কার্যক্রম শুরু করি।
এরপর অনেকগুলো সংগঠন এই কার্যক্রম শুরু করেছে।
সাবেক পৌর কাউন্সিলর ও ‘ফেলে আসা দিনগুলি’ নামে একটি গ্রুপের সমন্বয়ক সৈয়দ রুমি জানান, অক্সিজেন সেবা দেয়ার পাশাপাশি অসহায় এবং কর্মহীন মানুষদের তারা খাদ্য সহায়তাও দিচ্ছেন।
পটুয়াখালীর মেয়র এবং অক্সিজেন ব্যাংকের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে হাসপাতালের পক্ষে এত মানুষের অক্সিজেন এবং বেড সরবরাহ করা খুবই কঠিন।
তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিই সমাজে যারা সচ্ছল আছেন তাদের সহযোগিতায় মানুষকে বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা দেয়া হবে।
এই সেবার পরিধি এখন অনেক বেড়েছে। প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হবে। যেসব সংগঠন অক্সিজেন সরবরাহ করছে তাদের সবধরনের সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।
পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়রের কাছে অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে ৩৭টি।
পটুয়াখালীবাসী নামক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছে ১০টি, ব্যাচ-৮৬ এর কাছে ১৬টি, ব্যাচ-৯০ এর কাছে ৮টি, ফেসবুকভিত্তিক সংগঠন ‘ফেলে আসা দিনগুলি’ গ্রুপের কাছে ১৫টি, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ১০টি, চরপাড়া অক্সিজেন ব্যাংকের কাছে তিনটি, ঢাকাস্থ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় সমিতির কাছে ১০টি, জেলা বিএনপির কাছে পাঁচটি এবং জিয়া ফাউন্ডেশনের কাছে চারটি অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে। এসব সিলিন্ডার নিয়মিত রিফিল করা হচ্ছে।