কুয়াকাটা সৈকতে মাত্র একদিনের ব্যবধানে আরও দুইটি ডলফিনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। সোমবার দুপুরে স্থানীয় জেলেরা সৈকতের পশ্চিমপ্রান্তে কম্পিউটার সেন্টার সংলগ্ন এলাকায় বিপন্ন জলজ স্তন্যপায়ী প্রাণী ডলফিনের দুটি মরদেহ দেখতে পান।
সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা ওয়ার্ল্ড ফিস পটুয়াখালীর সহকারী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি জানিয়েছেন, মৃত পাওয়া একটি হাম্পব্যাক এবং অন্যটি পরপয়েস প্রজাতির ডলফিন। প্রত্যেকটির দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ৭ ফুট। ডলফিনগুলোর মুখে জাল পেঁচানো এবং আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এছাড়া ডলফিন দুটোর দেহে ইতোমধ্যে পচন ধরেছে।
সাগরিকা স্মতি বলেন, সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী রক্ষায় কুয়াকাটায় জেলেসহ মৎস্য ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সচেনতার বিকল্প নেই। এর আগে শনিবার শেষ বিকালে কুয়াকাটা সৈকতে শুশুক প্রজাতির একটি মৃত ডলফিন উদ্ধারের পর বালুচাপা দেওয়া হয়।
বনবিভাগ খাজুরা বিটের কর্মকর্তা মো. আলামিন এ তথ্যের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মৃত ডলফিন সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বালুচাপা দেওয়া হয়েছে। সৈকতের মাঝিবাড়ি পয়েন্টের বাসিন্দা আলী হোসেন জোমাদ্দার জানিয়েছেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে কুয়াকাটা সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে নানা প্রজাতির অন্তত ১০-১২টি মৃত ডলফিনের দেখা মেলে। তবে কী কারণে এসব জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে এটি খতিয়ে দেখা উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
কলাপাড়া উপজেলা ফিশিং ট্রলার মাঝি সমবায় সমিতির সহ-সভাপতি জেলে নুরু বলেন, ডলফিন ও শুশুকদের গভীর সমুদ্রে দেখা মেলে। সমুদ্র উত্তাল ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস থাকলে তারা জেলেদের আগাম সতর্ক বার্তা দেয়। ওইসব প্রাণীর সংকেত পেয়ে জেলেরা উপকূলের কাছাকাছি চলে আসতে পারেন।
কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ডলফিন মানুষের ন্যায় ফুসফুস দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস করে থাকে। জেলেদের জালে আটকা পড়ে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে এসব মারা যাচ্ছে বলেই ধারণা করছি। এক্ষেত্রে জেলেদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান মৎস্য কর্মকর্তা।
পটুয়াখালী বন বিভাগের উপবিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ডলফিন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন দ্বারা রক্ষিত। আমরা অচিরেই জেলেদের সচেতনতায় এসবের নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিতে কাজ শুরু করব।