আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:
আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের দুই গ্রামের জলাবদ্ধতা ও কৃষকদের রক্ষায় কাউনিয়া খালের বাঁধ কেটে দিলেন চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক। শুক্রবার দুপুরে ওই খালের ছয়টি স্থানের বাঁধ কেটে দেন তিনি। এতে দুই গ্রামের ১০ হাজার একর জমির জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পেল। বাঁধ কেটে দেয়ায় কৃষকদের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলা হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া ও গুরুদল গ্রামের মধ্যখানে প্রবাহিত কাউনিয়া খান। ওই প্রবাহমান খালটি স্থানীয় প্রভাবশালী নান্নু মোল্লা গত ১০ বছর ধরে অবৈধ ভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে আসছেন। ওই খানের পাঁচটি স্থানে বাঁধ ও একটি কালভার্টের মুখে জাল দিয়ে আটকে দেয়ায় পানি নিস্কাশন বন্ধ হয়ে যায়। পানি নিস্কাশন বন্ধ থাকায় এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। জলাবদ্ধতার কারনে গত ১৩ দিন ধরে জমি চাষাবাদ বন্ধ ছিল। এতে প্রায় ১০ হাজার একর জমি অনাবাদী থাকার আশঙ্কায় ছিল। সরকারী খালের বাঁধ অপসারন করে পানি সরবরাহ সচল করতে এবং জমি চাষাবাদে ভুক্তভোগী কৃষকরা গত মঙ্গলবার আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউএনও মোঃ আসাদুজ্জামান উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিমকে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম সরেজমিনে কাউনিয়া খালের বাঁধ পরিদর্শন করেন। পরে তিনি বাঁধ কেটে কৃষকদের জমি রক্ষার সুপারিশ করেন। শুক্রবার হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিকের নেতৃত্বে শতাধিক কৃষক গিয়ে কাউনিয়া খালের ছয়টি বাঁধ কেটে দেন। বাঁধ কেটে দেয়ার হলদিয়া ও গুরুদল গ্রামের জলাবদ্ধতার নিরসন হলো। এতে ওই দুই গ্রামের ১০ হাজার একর জমি চাষাবাদে আর সমস্যা রইলো বলে জানান কৃষকরা।
কৃষক রুহুল আমিন প্যাদা বলেন, কাউনিয়া খালের সকল বাঁধ কেটে দেয়ার জমি চাষাবাদে আর সমস্যা নেই। আমরা অনায়সে জমি চাষাবাদ করতে পারবো। তিনি আরো বলেন, বাধ কাটায় কৃষকদের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে। পানি নেমে যাচ্ছে।
বরগুনা জেলা পরিষদ সদস্য এ্যাডভোকেট আরিফ-উল হাসান আরিফ বলেন, খালে বাঁধ থাকায় বৃষ্টির পানিতে দুই গ্রাম জলাবদ্ধতায় তলিয়ে যায়। শুক্রবার গ্রামবাসীদের সাথে বাঁধ কেটে জলাবদ্ধ মুক্ত করা হলো।
আমতলীর হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক বলেন, উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে শতাধিক কৃষক নিয়ে কাউনিয়া খালের ছয়টি বাঁধ কেটে দিয়েছি। এতে দুই গ্রামের অন্তত ১০ হাজার একর জমি চাষাবাদের সমস্যার সমাধান হয়েছে।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, সরেজমিনে তদন্ত করে কাউনিয়া খালের বাঁধ কেটে দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। ওই সুপারিশ মতে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিকের নেতৃত্বে শতাধিক কৃষক বাঁধ কেটে দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, বাঁধ কেটে দেয়ার জমি চাষাবাদের আর কোন সমস্যা রইলো না।