ডেস্ক রিপোর্ট:
শিল্পী কালিদাস কর্মকার মারা গেছেন। শুক্রবার দুপুরে তাকে ঢাকার বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কালিদাসের ছোট ভাই শিল্পী প্রশান্ত কর্মকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
এদিকে, বরেণ্য চিত্রশিল্পী কালিদাস কর্মকারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং বিষয়টি জানায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোকবার্তায় বলেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এ চিত্রশিল্পী তার চিত্রকর্মে আবহমান বাংলার স্বরূপ প্রকাশের পাশাপাশি নিরীক্ষাধর্মী শিল্পকর্মের জন্য শিল্পীমহলে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছেন। তার কর্ম নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা জোগাবে।
প্রধানমন্ত্রী তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
শিল্পীর ছোট ভাই প্রশান্ত কর্মকার জানান, ইস্কাটনের বাসায় গোসল করতে গেলে সেখানে তিনি পড়ে যান। পরে তাকে বাথরুম থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ল্যাবএইড হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, ঘণ্টাখানেক আগেই তিনি মারা যান।
ল্যাবএইড হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার জানান, বিকাল ৩টার দিকে কালিদাস কর্মকারকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়।
ছোট ভাই প্রশান্ত কর্মকার আরও জানান, তার ভাইয়ের দুই মেয়ে কঙ্কা কর্মকার ও কেয়া কর্মকার আমেরিকায় থাকেন। খবর শুনে তারা ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। তারা দেশে ফিরলে শেষকৃত্য হবে। তার আগে মরদেহ বারডেমের হিমঘরে রাখা হবে।
শিল্পী কালিদাস কর্মকার ১৯৪৬ সালে ফরিদপুর শহরের নিলটুলীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তৎকালীন ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে দুই বছরের সূচনা কোর্স শেষ করে ১৯৬৯ সালে কলকাতায় সরকারি আর্ট কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে চারুকলায় স্নাতক করেন। শিল্পী কালিদাসের একক চিত্র প্রদর্শনীর সংখ্যা এ দেশের চারুশিল্পীদের মধ্যে সর্বাধিক, দেশে বিদেশে এ শিল্পীর ৭১টি চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৯৭৬ সাল থেকে ফ্রিল্যান্স শিল্পী হিসেবে দেশে-বিদেশে কাজ করেন। এছাড়া তিনি বহু আন্তর্জাতিক দলবদ্ধ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ ও আন্তর্জাতিক সম্মান লাভ করেন। জীবদ্দশায় একুশে পদক, শিল্পকলা পদকসহ অসংখ্য স্বীকৃতি পেয়েছেন বরেণ্য এ চিত্রশিল্পী।