উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন থেকে রেহাই পেতে একাধিক পদক্ষেপও নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত দুইজনের শরীরে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট মিলেছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ কথা জানালেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব লাভ আগরওয়াল।
সম্প্রতি ওমিক্রন আতঙ্কে নির্দিষ্ট কয়েকটি দেশ থেকে আসা যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে বেশি জোর দেওয়া হয়। এরপরই করোনা আক্রান্ত দু্ইজনের শরীরে ধরা পড়ে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। এর আগে ডেল্টা ভাইরাস সংক্রমণে ভারতজুড়ে অনেক মানুষ মারা যায়।
স্বাস্থ্যসচিব লাভ আগরওয়াল জানান, কর্ণাটকে দুইজনের শরীরে এই ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে একজন পুরুষ এবং অপরজন নারী। তাদের বয়স যথাক্রমে ৬৬ ও ৪৬ বছর। বুধবার রাতে এই রিপোর্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাতে এসেছে। তবে এরা কোন জায়গা থেকে এসেছেন, তা এখনও জানা যায়নি বলে জানান তিনি।
কিছুদিন আগেই করোনার ওই ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনকে উদ্বেগের কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশ্বের যে সব দেশে এখনও পর্যন্ত ওমিক্রনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, সেই দেশগুলিকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়। সৌদি আরবসহ এখন পর্যন্ত ২২টি দেশে ছড়িয়েছে মহামারি করোনার এই ধরন।
বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচারের অনুসারে, ওমিক্রন ধরন প্রথম আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানায় শনাক্ত হয়। এরপর করোনার এই ধরন আফ্রিকার আরও কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, হংকং, ইসরায়েল, ইতালি, জাপান, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, স্পেন, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, নাইজেরিয়া।
সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, এই রেজিমেন্টের বিস্তার ঠেকাতে কমপক্ষে ৭০টি দেশ ও অঞ্চল আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ওমিক্রন সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, যারা আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তারাও ওমিক্রনে আক্রান্ত হতে পারেন। যদিও কতটা সংক্রামক তা এখনও স্পষ্ট নয়। আরটি-পিসিআর পরীক্ষা এই রূপকে দ্রুত ধরতে সক্ষম বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
এই ভাইরাসের ওপর কোভিড টিকার কার্যকারিতা কতটা তা জানার জন্য গবেষণা চলছে বলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম করোনার সংক্রমণ দেখা দেয়। কয়েক মাসের মধ্যে এ ভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিভিন্ন সময় করোনার সংক্রমণ কমবেশি হয়েছে। তবে চলতি বছরের মে মাসের শেষের দিকে দেশে করোনার ডেল্টা ধরনের দাপটে পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। এরপর করোনাভাইরাসের গণটিকা দেওয়া শুরু হলে সংক্রমণ ও মৃত্যু উভয়ই কমতে শুরু করে।
সূত্র: এনডিটিভি, সিএনএন, টাইমস অব ইন্ডিয়া।