শামীম আহমেদ, ॥
বরিশালে শতকোটি ব্যয়ের দুটি পানি শোধনাগার নির্মাণের ৫ বছরেও পুরোপুরি একদিনও চালু হয়নি। নির্মাণ ত্রুটির অভিযোগ সিটি করপোরেশনের। তবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দাবি, সামান্য মেরামত আর সঠিক ব্যবস্থাপনায় চালু করা সম্ভব। টিউবওয়েলের হাতল চাপলেও পানি মিলছে না। এমন চিত্র শুধু বেলতলা নয়, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বরিশাল নগরীর বিভিন্ন স্থানে সুপেয় পানির সংকট। চাহিদা মেটাতে ২০০৯-১০ অর্থবছরে রূপাতলী ও বেলতলায় ২টি পানি শোধনাগার নির্মাণ শুরু করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০১৬ সালে তৈরি শেষ হয় আর ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেন। তবে নগরবাসীর দাবি, তারা কখনোই এই প্লান্টের পানি পাননি। বাধ্য হয়ে অনেকেই খাল, নদীর পানি ব্যবহার করছেন দৈনন্দিন কাজে। নির্মাণ ত্রুটিতে শতকোটি টাকার প্রকল্পটি ভেস্তে গেছে জানিয়ে সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র গাজী নঈমুল হোসেন লিটু বলছেন, অনিয়ম খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিশন গঠন করা হোক। তবে বাস্তবায়ন সংস্থা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মঈনুল হাসান বলছেন, সিটি করপোরেশনের কাছে তারা প্লান্ট দুটিকে বুঝিয়ে দিয়েছে। কিছু মেরামত আর সঠিক ব্যবস্থাপনায় এটা চালু করা সম্ভব। ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্লান্ট দুটি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ব্যয় ধরা শতকোটি টাকা। এর বাইরে জমি অধিগ্রহণের জন্য দেওয়া হয় আলাদা বরাদ্দ। সিটি করপোরেশন নগরীর বেলতলা ও রূপাতলীতে এর স্থান নির্ধারণ করে। সে অনুযায়ী কাজ শুরু করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। নির্মাণ শেষে প্লান্ট হস্তান্তর করার কথা ছিল সিটি করপোরেশনের কাছে। নির্মাণ শুরু হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই কীর্তনখোলা নদীর ভাঙনের মুখে পড়ে বেলতলা প্লান্ট। তারপরও কাজ চালিয়ে যায় প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০১৬ সালের জুনে নির্মাণ শেষের পরপরই ভাঙতে থাকা নদী ঢুকে পড়ে বেলতলা প্লান্ট এলাকায়। বিলীন হয়ে যায় প্লান্টের পন্ড ওয়ান ও ইনটেক ওয়ানের বড় অংশ। রাস্তাসহ পুরো প্রকল্পের প্রায় ৩৫ শতাংশ চলে যায় নদীগর্ভে। এতে কার্যক্ষমতা হারাচ্ছে এ প্লান্টটি। এ অবস্থায় প্লান্ট চালুর জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে নগর ভবন।