আমতলী প্রতিনিধি।
নদীতে ঝাঁপ দিয়ে রক্ষা পেল দুই সন্তানের জননী সোনিয়া ও তার শিশু পুত্র জোবায়ের। লঞ্চে আগুনে অঙ্গার হয়ে মারা গেলেন মা রেখা বেগম (৬০) ও বড় ছেলে জুনায়েত। স্বজনহারা পরিবারের মাঝে বইছে শোকের মাতম। তালতলীর দুই পরিবারের জন নিঁেখাজ রয়েছে।
জানাগেছে, তালতলী উপজেলার জাকিরতবক গ্রামের জাহাঙ্গির সিকদার জীবন জীবিকার তাগিয়ে গত পাঁচ বছর পুর্বে ঢাকায় যান। ওই খানে থেকে তিনি ভ্যানগাড়ী চালিয়ে পরিবার পরিজনের ভরন পোষন দেন। গত ১৬ ডিসেম্বর মা রেখা বেগম ও দুই পুত্র সন্তান জুনায়েত ও জোবায়েরকে নিয়ে সোনিয়া বেগম ঢাকায় স্বামীর কাছে যান। ৭ দিন সেখানে অবস্থান শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধায় বাড়ী ফিরতে বরগুনাগামী অভিযান- ১০ লঞ্চে ওঠেন। লঞ্চের ডেকে বিছানা পেতে মা ও দুই পুত্র সন্তানকে নিয়ে বসে ছিলেন সোনিয়া। গভীর রাতে লঞ্চে আগুন লাগলে সোনিয়া টের পেয়ে মা ও পুত্র জুনায়েতকে ডেকে তুলে নদীতে ঝাপ দেয়ার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু আগুনের ধোয়া আর প্রচন্ড তাপে সহ্য করতে না পেরে এক বছরের শিশুপুত্র জোবায়েরকে কোলে নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেন তিনি। স্থানীয়রা মা ও শিশুকে নদী থেকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এদিকে মা রেখা আক্তার ও বড় পুত্র জুনায়েত ( ৭) আগুনে পুড়ে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেন নিহত রেখা বেগমের ভাই জলিল সিকদার। স্বজনরা সোনিয়া ও জোবায়েরকে খুজে পেলেও রেখা ও জুনায়েতকে খুঁজে পায়নি। স্বজহনহারা পরিবারের মাঝে বইছে শোকের মাতম। অপরদিকে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের আগাপাড়া গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে শিমু আক্তার ও তার দুই জমজ নাতনি হাসি ও খুশি নিখোজ রয়েছে। আগুনে পুড়ে যাওয় রেখা বেগমের বাড়ী ছোটবগী ইউনিয়নের পিকে স্কুলের পাশে। এদিকে তালতলী উপজেলা প্রশাসন নিখোজ ব্যক্তিদের ব্যপারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা।
বেঁছে যাওয়া সোনিয়া আক্তার কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, আমার কোলের ধন জুনায়েত ও মাকে ফিরিয়ে দাও। জীবন বাঁচাতে মা ও পুত্র জুনায়েতকে নিয়ে নদীতে ঝাপ দিতে চেয়েচিলাম কিন্তু আগুনের প্রচন্ড তাপে মা ও বড় ছেলেকে আনতে পারিনি। আমি ছোট ছেলেকে নিয়ে নদীতে ঝাপ দিয়ে রক্ষা পেয়েছি। আমার সোনার মানিককে আমার কাঝে ফিরিয়ে দাও।
আগুনে পড়ে অঙ্গার হওয়া রেখা বেগমের ভাই জলিল সিকদার বলেন, ভাগ্নি ও তার শিশুপুত্রকে খুজে পেয়েছি। কিন্তু আমার বোন ও তার নাতি জুনায়েতকে খুঁজে পাইনি। ধারনা করা হচ্ছে তারা আগুনে পুড়ে আঙ্গার হয়ে গেছে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওছার হোসেনের মুঠোফোনে (০১৭৩৩৩৪৮০২৭) বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।