বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

পদ্মার ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কাশবনে

পদ্মার ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কাশবনে

অনলাইন ডেস্ক:

সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাদারীপুরের শিবচরে দিনে ও রাতে পদ্মায় চলছে মা ইলিশ নিধন উৎসব! এরপর সেই ইলিশ চরের কাশবনে মজুত ও বিক্রি করছেন অসাধু জেলেরা। আর সস্তায় সেই মাছ কিনে আইন ভাঙছেন কিছু অসাধু ব্যক্তি। প্রতিরোধ করতে গেলে ঘটছে প্রশাসনের ওপর হামলা।

প্রতিনিয়ত প্রশাসন অভিযান চালিয়ে ইলিশ শিকারিদের জেল-জরিমানা করলেও মাদারীপুরে থামেনি ইলিশ শিকারিদের দৌরাত্ম। দিনে তো চলছেই এমনকি সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয়ে ভোররাত পর্যন্ত পদ্মা জুড়ে চলছে ইলিশ নিধন যজ্ঞ। লোকচক্ষু আড়াল করতে ট্রলারগুলোতে কোনো বাতি ব্যবহার করছেন না অসাধু জেলেরা। সরকারি নিষেধাজ্ঞার মাঝে এভাবেই নতুন কৌশলে ইলিশ নিধন চলছে মাদারীপুরের শিবচর, শরীয়তপুরের জাজিরা, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং, ঢাকার দোহার এবং ফরিদপুরের সদরপুর অংশের পদ্মা নদীতে। আর এই মাছ নদীর চরে রেখেই মুঠোফোনের মাধ্যমে ও নদী পাড়ের প্রত্যন্ত বাজার বিক্রি হচ্ছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা নদীর পাড়ে গিয়ে বস্তায় বস্তায় কম দামে কিনে আনছেন মা ইলিশ। ঘটেছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর হামলার ঘটনাও। মাদারীপুর জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের অভিযানে এমন নতুন কৌশল ধরা পড়েছে। আটকের পর সাজা দেয়া হয়েছে প্রায় শতাধিক জেলেকে।

Madaripur-1

জানা যায়, মা ইলিশ সংরক্ষণে গত ৮ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাত থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে গত কয়েকদিন গভীর রাতে জেলার শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ঘাটে হাজির হন ভ্রাম্যমাণ আদালত। রাতের নীরবতা ভেঙে দুটি স্পিডবোট ও ট্রলারযোগে অভিযান পরিচালনাকারীরা হানা দিচ্ছেন পদ্মায়। ধরা পড়ছে মাছবোঝাই একের পর এক নৌকা। জেলেদের প্রতিটি জালেই ছিল মা ও জাটকা ইলিশের প্রাধান্য। এ সময় বেশকিছু নৌকা নদীতে জাল ফেলেই চরে পালিয়ে যায়। এ পর্যন্ত  প্রায় একশত জেলেকে দেয়া হয়েছে নানা মেয়াদে সাজা। জব্দকৃত ইলিশ এতিমখানায় বিতরণ করা হয়। আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় জাল। তবুও থামছে না ইলিশ শিকার। জিজ্ঞাসাবাদে ধরাপাড়া জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে দিনে কড়াকড়ি থাকায় সন্ধ্যার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত ইলিশ ধরছেন অনেকে। আর তা বিক্রি হচ্ছে নদীর চরে কাশবনে রেখেই। মুঠোফোনের মাধ্যমে ক্রেতাকে ডেকে এনে বা নদী পাড়ের বাজারে। কাজীরসুরা নামের এক বাজারে প্রকাশ্যেই ইলিশ ধরা ও বিক্রির ধুম ঠেকাতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে গুলি চালাতে বাধ্য হন প্রশাসন। নদীতে এখন ইলিশের ছড়াছড়ি হওয়ায় জেলেরা নিধন যজ্ঞে নেমেছেন। ক্রেতাদের দাবি শক্তহাতে প্রতিরোধ করা হোক এই অসাধু জেলেদের। কারণ তারা সারা বছর কম দামে ইলিশ খেতে চান।

মাদারীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ জানান, ইলিশ নিধনে সরকারি নিষেধজ্ঞা বাস্তবায়নে প্রায় প্রতিদিনই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেলেদের সাজা প্রদান এবং মাছ ধরার জালও জব্দ করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদারীপুর জেলায় মোট ১৬৭ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছেন। তবুও কোনোভাবেই জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না। অসাধু জেলে ও ক্রেতারা মাছ ক্রয়-বিক্রয় চালিয়ে যাচ্ছে। রাতের আধারে কাঁশবনে কিংবা চরে গিয়ে অল্প দামে ইলিশ কিনছেন লোকজন।

Madaripur-1

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলাম জানান, মা ইলিশ সংরক্ষণে গত ৯ অক্টোবর থেকে ২২ দিন মা আহরণে সরকারের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ ধরা, ক্রয়-বিক্রয়, বহন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই আইন অমান্য করে মা ইলিশ মাছ ধরে বিক্রি করায় জেলে ও ক্রেতাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেয়া হচ্ছে। আগামীতে স্থানীয় ক্রেতা ও জেলেদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech