আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
যৌতুক দিতে রাজি না হওয়ায় স্বামী মহসিন স্ত্রী নাজমা আক্তার সাথীকে নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার রাতে আহত সাথীকে পুলিশ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার সেকান্দারখালী গ্রামে শনিবার সন্ধ্যায়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
জানাগেছে, ২০২০ সালের ২৭ নবেম্বর উপজেলার ছোট নীলগঞ্জ গ্রামের সামসুল হক গাজীর বরিশাল মহিলা কলেজে অনার্সে পড়ুয়া কন্যা নাজমা আক্তার সাথীর সাথে সেকান্দারখালী গ্রামের নাশির মুসুল্লীর ছেলে মহসিন মুসুল্লীর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় জামাতাকে দুই ভরি স্বর্নালংকারসহ প্রয়োজনীয় আসবাব পত্র দেয় এমন দাবী শ^শুর সামসুল হক গাজীর। কিন্তু বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন অযুহাতে স্ত্রীকে স্বামী ও তার শ^শুড়ী মুনসুরা বেগম নির্যাতন করে আসছে বলে অভিযোগ সাথীর। গত ২০ জানুয়ারী সাথীকে তার বাবার কাছ থেকে স্বামী মহসিন ১০ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দিতে। ওই টাকা দিতে অস্বীকার করে সাথী। এ নিয়ে তাকে ওইদিন বেধরক মারধর করে। স্বামী ও শ^াশুড়ীর মারধরে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। কিন্তু তাকে স্বামী মহসিন চিকিৎসা না করে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। গত ১০ দিনে স্বামী ও শ^াশুড়ী তিন দফায় মারধর করেছে বলে অভিযোগ সাথীর। শনিবার সন্ধ্যায় স্ত্রীকে স্বামী ও শ^শুড়ী আবারো মারধর করেন। মেয়ের নির্যাতনের খবর শুনে সাথীর বাবা সামসুল হক গাজী ৯৯৯ ফোন দেয়। ওইদিন রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নির্যাতিত নাজমা আক্তার সাথী বলেন, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবীতে অন্তত অর্ধশতাধিক বার শারীরিক নির্যাতন করেছে। ১০ দিন পুর্বে আমাকে বাবার কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে নিতে বলে। আমি এ টাকা এনে দিতে অস্বীকার করায় গত ১০ দিনে আমাকে তিন বার মারধর করেছে। তিনি আরো বলেন, মারধর করেই খ্যান্ত হয়নি তারা জীবন নাশের হুমকি দিয়ে ঘরের মধ্যে আটকে রেখেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
সাথীর বাবা মোঃ সামসুল হক গাজী বলেন, জামাতা মহসিন আমার মেয়ের কাছে ১০ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে। আমি গরিব মানুষ যৌতুক দিতে অস্বীকার করায় আমার মেয়েকে অমানষিক নির্যাতন করেছে।
স্বামী মহসিন মুসুল্লী যৌতুক দাবীর কথা অস্বীকার করে বলেন, সামান্য কথা কাটাকাটির মধ্যে দু-একটি চর থাপ্পর মেরেছি।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মোঃ সুমন খন্দকার বলেন, সাথীর শরীরে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়।
আমতলী থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।