প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, পেশাজীবী সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গের প্রস্তাবিত নামের তালিকা প্রকাশ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সোমবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন গঠনে বিভিন্ন উৎস থেকে প্রস্তাবিত ৩২২ জনের এ খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়। পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে নামগুলো প্রকাশ করা হয়। তবে, কারা এসব নাম প্রস্তাব করেছে তা প্রকাশ করা হয়নি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রকাশিত তালিকায়, অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, ড. মোহাম্মাদ জাফর ইকবাল, অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, সাংবাদিক অজয় দাস গুপ্ত, সাবেক নির্বাচন কমিশন এম শাখাওয়াত হোসেন, কাজী হাবিবুল আওয়াল, আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও অধ্যাপক কাজী দীন মোহাম্মাদসহ ৩২২ জনের নাম রয়েছে।
এর আগে, গতকাল দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের মতো বৈঠকে বসে সার্চ কমিটি। বৈঠক শেষে সার্চ কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান জানান, কমিটিতে জমা পড়া সব নাম ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। আর যেসব রাজনৈতিক দল নাম দেয়নি, তাদেরকে আজ বিকেল ৫টার মধ্যে জমা দেয়ার আহ্বান জানান হয়।
সার্চ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে দেশের বিশিষ্টজনরা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ব্যক্তিদের ইসিতে নিয়োগ দেয়ার পক্ষে মত দেন। তবে, এদের মধ্যে কারও কারও বক্তব্যে উঠে এসেছে নিরপেক্ষ নয়, সাহসী ব্যক্তিদেরই ইসিতে দেখতে চান তারা। আবার কেউ বলেছেন, নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে এমন ব্যক্তিরা যেন কমিশনে নিয়োগ না পান।
আজ ১৪ই ফেব্রুয়ারি কে এম নুরুল হুদা কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কথা থাকলেও তা হয়নি। তবে, নতুন আইন অনুযায়ী কমিশনার নিয়োগের লক্ষ্যে নাম সুপারিশের জন্য আগামী ২৪শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় পাবে সার্চ কমিটি।
দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও এই প্রথম আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠিত হচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগের লক্ষ্যে গেল ২৭শে জানুয়ারি ‘নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ জাতীয় সংসদে পাস হয়। এছাড়া নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের লক্ষ্যে যোগ্য ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে সভাপতি করে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে দেন রাষ্ট্রপতি।
সার্চ কমিটির কাছে এ পর্যন্ত বিভিন্ন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ১৩৬ জনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। আর পেশাজীবী সংগঠনগুলো ৪০ জনের নাম প্রস্তাব করেছে। এছাড়া ইমেইলে পাঠান হয়েছে ৯৯ জনের নাম এবং ব্যক্তিগতভাবে ৩৪ জনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।
এসব ব্যক্তিদের মধ্যে থেকেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ দিতে রাষ্ট্রপতির কাছে যোগ্যদের নাম প্রস্তাব করবে সার্চ কমিটি। তাদের মধ্যে থেকেই ৫ জনকে নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি।