বরিশালে ইফতারির বাজারে নতুনত্ব নেই। পুরনো আমলের পিয়াজু, চপ, বেগুনি ও ছোলাসহ গতানুগতিক পণ্যেই ইফতারি সম্পন্ন হয় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত বেশিরভাগ মানুষের। আর বিত্তশালীদের জন্য রয়েছে তারকা হোটেলের বাহারি নামের ইফতার।
এদিকে নিম্ন আয়ের মানুষের কোনো পছন্দ-অপছন্দ নেই। পান্তা ভাত থেকে শুরু করে চিরা, ছোলা-মুরি হলেই ইফতার হয়ে যায় তাদের। এদিকে ইফতারি পণ্যের গুণগত মান যাচাই করার কোনো পদক্ষেপ গত ৪ দিনেও দেখা যায়নি বরিশালে। সকালের দিকে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত নামলেও ২-৩টি দোকানে নামমাত্র অভিযান করে হাফিয়ে ওঠেন তারা।
প্রতি বছর রমজান এলেই ইফতার বাজার ঘিরে আলাদা উন্মদনার সৃষ্টি হয় বরিশালে। এবারও ব্যতিক্রম নয়। রাস্তার একাংশ, ফুটপাত এবং দোকানের সামনের খোলা জায়গায় নানা ধরনের ইফতারি পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। বিকেল ৩টার পর থেকে ৫টা পর্যন্ত জমজমাট থাকে ইফতারির বাজার। বিত্তবানদের ইফতার বাজারে বিক্রি শেষ হয় আরও আগে।
নামিদামি দোকানে আস্ত চিকেন ফ্রাই ৬০০ টাকা, খাসির লেগ ৮০০ টাকা, কালোভুনা ১ হাজার টাকা কেজি, শাহী জিলাপি ২০০ টাকা কেজি, হালিম ২৬০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা এবং ৩০ টাকা থেকে শুরু করে আড়াই শ’ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে ফিরনী। এছাড়া চিকেন চপ ১৫ টাকা, চিকেন পুলি ১৫ টাকাসহ অন্যান্য পণ্যের দাম রয়েছে আগের মতোই।
ফুটপাতের দোকানে পিয়াজু, ডিম চপ, বেগুনি, আলুর চপ ও পটলের চপ পাওয়া যায় ৫ থেকে ১০ টাকায়। পুরো ডিমের চপ ২০ টাকা, ভেজিটেবল রোল ২০ টাকা, চিংড়ি ফ্রাই দেড়শ’ টাকা, হালিম ২০০ টাকা, শাহী জিলাপি ১৩০ টাকা, চিকেন ফ্রাই ৫০ টাকা এবং বোরহানি ৮০ টাকা লিটার দরে বিক্রি হচ্ছে। তৃনমূল ইফতারির দোকানে ছোলা, পিয়াজু, বেগুনি, চপ আর মুড়িই ভরসা।
ইফতারি ক্রেতা আবুল বাশার বলেন, কিছু ইফতারি পণ্যের দাম বেড়েছে। আবার কিছু পণ্যের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও পণ্য সাইজে ছোট করা হয়েছে।
ইমাম হোসেন নামে একজন বলেন, দিন দিন ইফতারি পণ্যের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। আর পণ্যের গুণগত মানও কমে গেছে। এগুলো দেখার কেউ নেই।
তবে জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) সুব্রত কুমার বিশ্বাস বলেন, রমজান উপলক্ষে ইফতারির বাজার নজরদারি করার জন্য প্রতিদিন বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন। গত বুধবারও ৩টি রেস্তোরা থেকে মোটা অঙ্কের জরিমানা হয়েছে। ইফতারির বাজারে ভেজাল পণ্য বিক্রি কিংবা অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রির অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, সামর্থহীন মুসল্লিরা পান্তা ভাত থেকে শুরু করে চিড়া, মুড়ি, গুরের সরবত দিয়েও ইফতারি করে থাকেন। অপরদিকে বরিশালের বিভিন্ন মসজিদে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও স্থানীয় এলাকাবাসীর দানে ইফতার পার্টি কার্যক্রম চালু রয়েছে। এসব ইফতারিতে স্থানীয় বাসিন্দা ছাড়াও অসহায়, দুস্থ, পথচারী এবং আশপাশের দোকানিরা অংশগ্রহণ করেন।